নিয়ামতপুরে জোরপূর্বক মাছ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ

আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ১০:০৪ অপরাহ্ণ

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:


নওগাঁর নিয়ামতপুরে জোরপূর্বক মাছ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে নিয়ামতপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভাবিচা ইউনিয়নের বোরামবাড়ী এলাকার প্রায় ৫০ জন আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনের উপস্থিতিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মতিন সোনার, সফিউল্লাহ সোনার, মোখলেছুর রহমান, মিঠু, মিনহাজুল, আলম, শহীদুল, তোতা, শ্রী পলাশ, শ্রী শ্যামল, হারুন অর রশীদসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মাছ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী ওই পরিবারগুলো।

লিখিত বক্তব্যে বোরামবাড়ী আদিবাসী মৎস্যজীবি সমিতির সহসভাপতি সুশিল মার্ডি অভিযোগ করেন, ১৯৯৩ সাল থেকে বোরামবাড়ী এলাকার ৩ টি পুকুর পাড়ে প্রায় ৩০ টি পরিবার বসবাস করে আসছে। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত পুকুরে মাছ চাষ করে এই পরিবারগুলো আয় করে আসছিল।
কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের গাবতলি এলাকার আব্দুল মতিন সোনার ও সফিউল্লাহ সোনার প্রায় ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় তারা আমাদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করেন।

মঙ্গলবার(৭ জানুয়ারি) সকালে আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে ৩ টি পুকুরে বিক্রির উদ্দেশ্যে মাছ ধরা হয়। মাছ ধরে তা বিক্রির উদ্দেশ্যে মান্দা উপজেলার সতীহাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে দুটি পিক-আপ গাবতলী বাজারে পৌঁছালে ওঁতপেতে থাকা উপরোক্ত ব্যক্তিরা জোরপূর্বক পিক-আপে থাকা লোকজনকে মারধর করে নামিয়ে দিয়ে প্রায় ২০ মণ মাছ নিয়ে চলে যায়। এতে আমাদের প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা আদিবাসী লোকজন শান্তিপ্রিয় হওয়ার পরও এমন ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমন ঘটনাই সরকার ও প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত সফিউল্লাহ সোনার মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমাদের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি মহল আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে চক্রান্ত করছে। এ ঘটনার সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের বোরামবাড়ী এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মাছ ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের ছোট ভাই আব্দুল মতিন সোনারসহ আরও কয়েকজনকে। তবে এ ঘটনায় নিজের কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন আব্দুল মতিন সোনার। তিনি মঙ্গলবার(৭ জানুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমকে জানান, বোরামবাড়ী এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের পুকুরের মাছ ছিনতাইয়ের যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে তখন আমি উপজেলা সদরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমির) কার্যালয়ে ছিলাম।

তিনি আরও বলেন, আমার বড় ভাইয়ের জনপ্রিয়তায় হিংসাত্মক হয়ে আব্দুর রহমান, রেজাউল করিম ও সেকেন্দারসহ আরও অনেকে আওয়ামী লীগের কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের প্রপাগা-া বাস্তবায়নের হীন লিপ্সায় মত্তো হয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের এ হীন উদ্দেশ্য নস্যাৎ করা হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিউল্লাহ সোনার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বাচ্চু প্রমূখ।