শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিয়ামতপুর প্রতিনিধি:
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় বোরো মৌসুমের অভ্যন্তরিন ধান-চাল সংগ্রহে নির্ধারিত সময় পার হলেও পূরণ হয়নি অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা। সিদ্ধ চালের ক্ষেত্রে লক্ষামাত্রা অর্জনের কাছাকাছি পৌছালেও ধান সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে চরমভাবে। ধান সংগ্রহে কেন এমন বিপর্যয় এমন প্রশ্নে সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন,সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে স্থানীয় বাজারে দর বেশি থাকায় খাদ্যগুদামে ধান দেননি কৃষকরা। এতেই ধান সংগ্রহ অভিযান চরমভাবে বিপর্যয়ে পড়েছে।
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে , বোরো ধান সংগ্রহ-২০২৪ মৌসুমে উপজেলায় ৪৫ টাকা কেজি দরে ৩ শ ৯৭ টন সিদ্ধ চাল এবং ৪৪টাকা কেজি দরে ৪৮ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া ৩২টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৩শ ২৭ টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ দেয়া হয়। চলতি বছরে গত মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা করা হয়। গুদামে সিদ্ধ চাল সরবরাহে উপজেলার ১৩ জন মিলার চুক্তিতে আসে। এসব ধান-চাল সরবরাহে সরকারীভাবে সময়সীমা বেধে দেয়া হয় ৩১আগষ্ট পর্যন্ত।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ৩ শ ৯৭ টন চালের মধ্যে মিলাররা সরবরাহ করেছেন ৩ শ ৮৬ টন। এতে এখনো ১১ টন চাল সংগ্রহে ঘাটতি রয়েছে।
সিদ্ধ চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি হলেও বিপরীত চিত্র ধান সংগ্রহে। সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ২ হাজার ৩ শ ২৭ টন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ শ ৩১ টন। ফলে ধান সংগ্রহ অভিযান চরমভাবে ব্যহত হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে চান-চাল সংগ্রহ উপজেলা সদরের খাদ্য গুদামে হলেও দ্বিতীয় খাদ্য-গুদাম শিবপুরে এক ছটাকও সংগ্রহ হয়নি।
কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করার পরও কৃষকদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি।
উপজেলা সদরের কৃষক নুরুল ইসলাম, রতন দাস, সনজিত দাসের সাথে কথা বললে তাঁরা প্রতিবেদককে জানান, সরকারি খাদ্য-গুদামে সহজ শর্তে ধান না নেওয়ায় এমন শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সরকারী খাদ্য গুদামে ধান দিতে গেলে ব্যাংক একাউন্ট,অনলাইনে আবেদন,ধানের মান নির্নয়সহ বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়।
তাছাড়া সরকার ধান ক্রয়ে যে দর নির্ধারণ করেছেন তা স্হানীয় বাজারের থেকে কম। এর চাইতে স্থানীয় বাজারে মনপ্রতি ধান ২৫০থেকে ৩০০টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোন ঝামেলা ছাড়াই ধান বিক্রির টাকা হাতে পাচ্ছি। তাই খাদ্যগুদামে কিছু ধান দিলেও ঝামেলার কারনে আর দেওয়া হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা পারভেজ আনোয়ার বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে ধান সংগ্রহে লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে কিনা তার মতামত চেয়ে উর্দ্ধতন মহল থেকে পত্র দেয়া হয়েছিল। সেখানে ধান সংগ্রহ হওয়ার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময় বৃদ্ধি করা হবে কিনা সে নির্দেশনা এখনো পাননি বলে জানান তিনি।