নির্বাচনবিরোধীরা কী পেল!

আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

সময়ের প্রয়োজন বুঝতেই হবে

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচরে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো। নির্বাচন কমিশনের দাবি ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই পরিমাণ ভোটকাস্টিং উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। যদিও ভোট বর্জনকারীরা বলছে, দেশের মানুষ ভোট বর্জন করেছে। তারা সেটা বলতেই পারে- তবে এ কথা বলে ভোটকে অসিদ্ধ করার সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। ভোট প্রদান প্রক্রিয়া দেশবাসীর কাছে খুবই দৃশ্যমান ছিল। ভোটাররা কেন্দ্রে কেন্দ্রে গেছেন, ভোটও দিয়েছেন। যে সংখ্যক ভোটার ভোট কেন্দ্রে গেছেন এবং ভোট দিয়েছেন তাতে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সহজ নয়। এটা তো ঠিক যে, ৫৮ দশমিক ২০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। তাতেও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ বা বেআইনি বলার কোনো সুযোগই নেই।

নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মোটেও অপেক্ষা না করে দ্রুতই নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই এমপিদের শপথগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সংসদের নেতা, উপনেতা ও স্পিকার নির্বাচনও হয়ে গেছে। নির্বাচনবিরোধীরা বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কাছে বারবার হোঁচট খেয়ে আসছে। আন্দোলন যতই কঠোর- সহিংস হলেও নির্বাচন ঠেকানো যায়নি। বিদেশের চোখ রাঙানিকেও আওয়ামী লীগ উপেক্ষা করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামনে থেকেই চোখে চোখ রেখেই সব কিছু মোকাবিলা করেছেন। নির্বাচনের পরেও যেসব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে- তাও মোটেও গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং নির্বাচনবিরোধীদের বিদেশ নির্ভরতা একেবারেই কাজে লাগেনি।

সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মনে করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে একইসঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহের বিষয়টিও তারা জানিয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, অর্থনৈতিক ও মানুষে মানুষে যোগাযোগ গভীর করার জন্য সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশিদারিত্ব বজায় রাখবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ বিরোধিতা মাণে সময়কে উপেক্ষা করাও নয়।

নির্বাচনবিরোধী প্রোপাগান্ডায় সাত মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ তথ্য জানান, মার্কিন সাবেক কংগ্রেস ম্যান জিম বেটসের নেতৃত্বে পর্যবেক্ষক দল। তবে, কারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি তারা। লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি সঠিক হলে এটা বলা যায় যে, নির্বাচন নিয়ে বিরোধিতাও বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল! বিষয়টিকে নির্বাচন বানচাল করার পদেেক্ষগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

রাজনীতিতে দেশ-মানুষের ওপর নির্ভরতা উপেক্ষা করে বিদেশিদের ওপর অধিকমাত্রার নির্ভরতার ফল যে ভাল হয়নি সেটা নির্বাচনবিরোধীদের সামনে নতুন শিখন হতে পারে। বিশ্ব রাজনীতির পরিবর্তনের ধারা মাথায় না রাখতে পারলে সিদ্ধান্ত যে ভুল ও বিভ্রান্তির চোরাবালিতে ডুবে যায় তারও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। সচেতনতার স্তর ও সক্ষমতার পরিমাপ বিশ্লেষণ করে রাজনীতিতে দেশ-মানুষের ওপর নির্ভরতার রাজনীতিটাই খুব বেশি প্রয়োজন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ