নির্বাচনের আগেই জনগণের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে: জোনায়েদ সাকি

আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৬:৪৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায় করেছে। তারা নতুন রাজনৈতিক শক্তি দেখতে চায়। কিন্তু আমাদের সেই রাজনৈতিক শক্তি আছে? আমরা কি ছাত্র-জনতাকে এখনও ঐক্যবদ্ধ করে রাখতে পেরেছি? এই অভ্যুত্থান দাবি করে, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। কাজেই আগামী নির্বাচনের আগেই আমাদেরকে জনগণের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।’



শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য গণসংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘৭২ এর সংবিধানে জন আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষিত হয়েছে। ক্ষমতা কাঠামো পাকাপোক্ত করতেই ৭২ এর সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। ৭২ এর সংবিধানই বাকশাল তৈরি করেছিল- এটি বদলাতে হবে।’

তিনি বলেন ‘বৈষম্য দূর করতে হলে ফ্যাসিস্ট সংবিধান পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে। অভ্যুত্থানের চেতনায় নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক দল তৈরি করতে হবে।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আইনের সংস্কার করতে হবে। আর তার ভিত্তিতে এমন নির্বাচন ব্যবস্থা আয়োজন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে আর কেউ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। নতুন নির্বাচন কমিশন হয়েছে। আপনারা (নির্বাচন কমিশন) এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, যাতে আর কেউ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র যদি পেতে হয়, তাহলে আমাদের একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। তার ভিত্তি হবে গণতান্ত্রিক সংবিধান। এই ফ্যাসিস্ট সংবিধান নয়, হতে হবে একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবনের চেয়ে সম্মান অনেক বড়। যখন সম্মান কিংবা ইজ্জতে আঘাত লাগে, তখন মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে। আমরাও দেখেছি, শিক্ষার্থীরা ১৪ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাস ও ছাত্রীরা হল ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়েছে- তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার। কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার। তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। এই রাষ্ট্র আমরা বদলাতে চাই। যাদের আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। তারা আমাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলে। আয়নাঘরে নিয়ে ঢুকিয়ে রাখে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্নমত স্মরণ করার জন্য।’

গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে। প্রশাসনকে তারা এইভাবে ব্যবহার করেছে। প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান, জেনারেল আজিজ সম্পত্তি কীভাবে বানিয়েছে! ওই বেনজীর আহমেদ কীভাবে সম্পদ গড়েছে! এরা এইভাবে লোভ-লালসা ও লুটের ভাগ-বাটোয়ারা দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলি, একটা সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুলসিত করেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব কর্মকর্তারা কুলসিত করেছে লুটপাট করে, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ন্যায় বিচার হবে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা। সবার কাছে বার্তা থাকা দরকার। কোনও সরকারি কর্মকর্তা কোনও অবৈধ সরকারের এই রকম পা চেটে দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নেয়- তার শাস্তি কি হবে এটা বাংলাদেশের সবার খেয়াল রাখা দরকার।’

গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি মুরাদ মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংগঠনটির কেন্দ্র কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু। সংগঠনের রাজশাহী জেলা সদস্য সচিব জুয়েল রানার সঞ্চালনায় এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ