শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে বেড়েছে অস্ত্রের চোরাচালান। জানা গেছে, ভারত থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র চোরাচালানের অন্যতম পথ হিসেবে শিবগঞ্জ সীমান্তকে বিবেচনা করে বিজিবি। এ পথে সারা বছরই অবৈধ অস্ত্র-গুলি আসে। আর এসব অস্ত্র নানা হাত ঘুরে পৌঁছে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিজিবি বলছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অস্ত্রের চোরাচালান বেড়ে গেছে। বিজিবির তথ্য বলছে, গত ১১ মাসে সীমান্ত এলাকায় ২০টি পিস্তল জব্দ করেছে ৫৯ বিজিবি। সঙ্গে ছিল ৩৭৩টি গুলি, ৩২টি ম্যাগাজিন ও মেশিনগানের ৫১টি গুলি।
সম্প্রতি অস্ত্রের চোরাচালান বেড়েছে। সর্বশেষ ২০ ডিসেম্বর একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ছয়টি গুলিসহ রুমা বেগম নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেন ৫৯ বিজিবির সদস্যরা। একই রাতে চকপাড়া সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া একটি বস্তা তল্লাশি করে ছয়টি বিদেশি পিস্তল, ১২টি ম্যাগাজিন, ২৩৬টি গুলি ও মেশিনগানের ৫১টি গুলি উদ্ধার করে বিজিবি। এ যাবৎকালে ৫৯ বিজিবির সবচেয়ে বড় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান এটি। এর আগে ১৫ নভেম্বর একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ৩৬টি গুলিসহ শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্ত থেকে মাহবুব নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। ৫৯ বিজিবির পাশাপাশি ৫৩ বিজিবি ও র্যাব-৫ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যদের অভিযানেও নিয়মিত অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আসছে। এ জন্য বিজিবি সদর দপ্তর থেকে সীমান্তে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে নিয়মিত টহল টিমের বাইরে অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ টিম প্রস্তুত রয়েছে প্রতিটি বর্ডার অবজারভেশন পোস্টে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় নিয়মিত চৌকি বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ভারতের বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের মুঙ্গের এলাকার বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। ওই সব এলাকা সীমান্তঘেঁষা। ভারতের সঙ্গে লাগোয়া শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়েই প্রধানত অবৈধ অস্ত্র আসে।
শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ, আজমতপুর, চকপাড়া, তেলকুপি, গোমস্তাপুর, রহনপুর ও ভোলাহাটের বিলভাতিয়া সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এসব অবৈধ অস্ত্রের বাহকদের বেশির ভাগই সাধারণ মানুষ। বিজিবি সূত্র জানায়, এসব অস্ত্রের গন্তব্য ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলো। তবে কারা এসব অস্ত্রের ক্রেতা, তা নিশ্চিত নয় বিজিবি। বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান বলেন, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক চোরাচালানের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বিশেষ টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। তথ্য ছিল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে একটি বিশেষ মহল অস্ত্রের চালান আনছিল। আমরা তাদের ধরতে সক্ষম হয়েছি।