বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার প্রয়াণ দিবস আজ। তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে গন্য করা হয়। বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ম্যান্ডেলাকে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতির পিতাতুল্য সম্মান জানানো হয়। ২৭ বছরের কারাজীবনের পর ১৯৯০ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর নিজের বাড়িতে মৃত্যবরণ করেন এই কিংবদন্তী নেতা।
নেলশন ম্যান্ডেলা ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দয়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৩ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।
দক্ষিণ অফ্রিকার ১ টি ছোট্ট গ্রামে তেম্বু গোত্রে ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন ম্যান্ডেলা।
তার বাবা ছিলেন রয়াল তেম্বু পরিবারের কাউন্সিলর। ৯ বছর বয়সেই বাবার মৃত্যু হয়। পরে তেম্বু গোত্র প্রধানের পরিচর্যায় বড় হন তিনি।
১৯৪১ সালে ২৩ বছর ম্যান্ডেলা ঘটা করে আয়োজন করা বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে চলে যান জোহান্সবার্গে। এর দু’বছর পর আফ্রিকানার উইস্টওয়াটারান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি নেন। সেখানে তিনি নানা বর্ণের নানা গোত্রের মানুষের সঙ্গে মেশেন।
আর এই মেলামেশা থেকেই বর্ণবাদ, বৈষম্যের মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করেন তিনি। এ ভাবনাই তাকে চালিত করে রাজনীতিতে।
ওই বছরই ম্যান্ডেলা যোগ দেন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এএনসি তে। পরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এএনসি ইয়ুথ লিগ।
১৯৬০ সালে এএনসি আইনগতভাবে নিষিদ্ধ হয়। ম্যান্ডেলা চলে যান আন্ডারগ্রাউন্ডে।
বর্ণবাদী সরকারের সঙ্গে সংঘাত উত্তেজনা বেড়ে যায় ১৯৬০ সালে। সে সময় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সামিল অনেক মানুষ পুলিশের গুলিতে মারা যায়। আর এ থেকেই অবসান ঘটে শান্তিপূর্ণভাবে চালানো আন্দোলনের। এএনসি’র ন্যাশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে ম্যান্ডেলা
তখন অর্থনৈতিক অন্তর্ঘাতী প্রচারণা ও আন্দোলন শুরু করেন।
তার ওপর নেমে আসতে থাকে কর্তৃপক্ষের খড়গ। ১৯৬৪ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার। রোবেন দ্বীপে ১৮ বছরের কারাবাসের পর ১৯৮২ সালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পোলসমুর কারাগারে।
১৯৯২ সালে দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের পর ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পান ম্যান্ডেলা। এর ৫ মাস পর দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে নির্বিশেষে সববর্ণের মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটে দেশটিতে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯৯ সালের ১৬ জুন সরকার থেকে অবসরে যান এবং শাসনভার এমবেকির কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।