বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পত্নীতলা :
নওগাঁর পত্নীতলায় প্রচন্ড তাপদাহে আবহাওয়া চরম উত্তপ্ত বিরাজ করছে। সেই সাথে চলমান বিদ্যুৎ বিভ্রাট (লোডশেডিং) কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলাকাভেদে ৭-১১ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এতে বয়স্ক ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন অন্যরাও।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় এই চিত্র দেখা গেছে। উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের দিঘীপাড়ার বাসিন্দা আজিজার রহমান (৬০) জানান, আগে লোডশেডিং তেমন হতো না। গত সপ্তাহ ধরে এতো বেশি লোডশেডিং হচ্ছে যে, তা চিন্তা করার মতো নয়। আমি শ্বাসকষ্টে ভূগছি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত। লোডশেডিংয়ের সময় গরমের ঠেলায় আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের পদ্মপুকুর গ্রামের হাসানুজ্জামান (৩৭) বলেন, প্রচন্ড গরমের কারণে দিনের বেলায় ধান শুকাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমার দুই কন্যা সন্তান।
গরমের ফলে অসুস্থ হয়ে ছটফট করছে। উপজেলার হরিপুর গ্রামের গৃহিণী হেনা পারভীন (৪২) বলেন, আমার মেয়ে শিশুর বয়স (২) বছর। এই চলমান লোডশেডিংয়ে ও তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রাতে ঘুমাতে পারছে না। তাই দিন-রাত অসহনীয় গরমে দিন দিন স্বাস্থ্যহানী হচ্ছে। উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের মশরইল গ্রামের আব্দুল মান্নান (৬৪) বলেন, আমরা কৃষি কাজের সাথে জড়িত। দিনে প্রচন্ড তাপদাহ সহ্য করে মাঠের কাজ করি।
রাতে লোডশেডিংয়ের সময় ঘরে ঘুমাতে পারি না। তাই ঘরের বাহিরে পুকুর পাড়ে গিয়ে পুরুষেরা অনেকেই বিছানা করে রাতে ঘুমাই। উপজেলা সদর নজিপুর পৌর শহরের আলহেরা পাড়ার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, দিনের বেলা প্রচন্ড তাপদাহের কারণে বিল্ডিং পুরোটাই উত্তপ্ত। তাই ঘনঘন চরম লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে আমি বাসার ছাদে চৌকি ফেলে বিছানায় ঘুমাই। সেখানে মশা হতে রক্ষা পেতে মশারীও টাঙানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজিপুর পৌর সদরের জনস্বাস্থ্যবিদ প্রভাষক ডা: এম.এ গফুর বলেন, আমার চেম্বারে আসা রোগিদের মধ্যে ৯০% মা ও শিশু। তাদের অধিকাংশই গরম জনিত কারণে নানা রকম রোগে ভূগছে। তিনি রোগিদের পরামর্শ দেন, গরম থেকে যথা সম্ভব দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে ও ঠান্ডা জাতীয় পানীয় পান করতে হবে।
গরমের কারণে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাথে সাথে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ঠান্ডা পানিতে বার বার কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে দিতে হবে এবং যতো দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক অথবা উপজেলা সরকারি হাসপাতালে রোগিকে নিয়ে যেতে হবে। এ বিষয়ে কোন রকম অবহেলা করার সুযোগ নেই।