মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পতœীতলা
নওগাঁর পতœীতলায় আমন ধান খেতের বালাই দমনে জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লাইফ পার্চিং এ পদ্ধতিতে ধান খেতের ক্ষতিকর পোকা কীটনাশক ছাড়াই দমন করা যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাইফ পার্চিং পদ্ধতিতে ধানের চারা লাগানোর ২০ দিনের পর থেকেই প্রতি বিঘা ধান খেতে ৫ থেকে ৭টি ধৈঞ্চা গাছের ডাল পুঁতে দিতে হয়। ডালগুলো থেকে মূল গজিয়ে তা জীবন্ত হয়ে উঠে। দ্রুত বর্ধণশীল এ সব ধৈঞ্চা গাছ স্বল্প পরিমাণে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে ঘান খেতের উর্বরতা বাড়ায়। আর এ ধৈঞ্চা গাছের ডালে পাখিরা বসে সহজেই ধানের মাজরা, ফুঁতি ও মাকড়সাসহ অন্য ক্ষতিকর পোকা খেয়ে পোকার বংশ বিস্তার রোধে ভূমিকা পালন করে থাকেন। জীবন্ত পার্র্চিং করা ধান খেতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যয় কম হয়। জৈবিক ও বৈজ্ঞানিক এ পদ্ধতিতে বালই দমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। তাই ধান চাষি ও কৃষকদের মাঝে দিন দিন এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলার মাটিন্দর ইউনিয়নের শাশইল মধ্যপাড়া গ্রামের ধান চাষি বকুল হোসেন, বুলবুল হোসেন, রমজান আলী, আসাদুজ্জামান, গোলজার হোসেনসহ আরো অনেকেই জানায়, ধান খেতের বালাই দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে জৈবিক ও বৈজ্ঞানিক জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে সুফল পেয়ে যাচ্ছেন। এতে তাদের উৎপাদন খরচও অনেকাংশে কমে আসবে ও ধানের বাম্পার ফলনের আশা ব্যক্ত করেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নজিপুর পৌর এলাকাসহ ১১টি ইউনিয়নে ২৬ হাজার ৩শ ২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আর এ মৌসুমের ধানের জাতগুলো হচ্ছে, সুমন স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, স্বর্ণা ৫, বি ধান ৩৪, ৫১, ৬৩ জিংক সমৃদ্ধ, ঊনপঞ্চাশ অন্যতম। এর মধ্যে, উফশি ২৫ হাজার ৭৫ হেক্টর ও স্থানীয় ১২ হাজার ৫০ হেক্টর ধান চাষ হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাপলা খাতুন বলেন, এ জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতিতে আফ্রিকা জাতের ধৈঞ্চা গাছের ডাল পুঁতে চাষিরা ফসলি জমিতে বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের কবল থেকে বিনা খরচে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, এলাকার কৃষকেরা যাতে স্বল্প ব্যয়ে আমন ধানের বাম্পার ফলন পায়, সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের অধীনে জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে তাদের উদ্বুদ্ধ করণে মৌসুমের শুরুতেই চাষি পর্যায়ে নিয়মিত ব্যক্তিগত যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। এ পদ্ধতি কৃষকদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হয়েছে।