পদ্মা সেতুতে স্বপ্নের রেল সংযোগ

আপডেট: অক্টোবর ১১, ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের অগ্রগতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা


পদ্মা সেতুতে সড়কের পরে এবার খুললো রেল চলাচলের পথ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতুতে রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে দিয়ে এবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন ছুটবে ৮২ কিলোমিটারের এই পথে।
রেলের সর্ববৃহৎ এ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রত্যেকটি স্টেশনকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উদ্বোধনী ট্রেনটিও সাজানো হয়েছিল রং-বেরঙের ফেস্টুন ও ফুলে ফুলে।

প্রধানমন্ত্রীর রেল সংযোগ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ ফরিদপুরের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচলের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ২০১৬ সালে অনুমোদন করে। প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার পথ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ইতোমধ্যেই ঢাকা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ এখন ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত।

পদ্মা রেলসেতু চালুর মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূর্ণতা পেল। ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে যাবে। ভাঙ্গা থেকে ট্রেনটি রাজবাড়ী, পাটুরিয়া, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ ও যশোর হয়ে খুলনায় যাবে। বর্তমানে ট্রেনটি বঙ্গবন্ধু সেতু, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া হয়ে চলাচল করে।

অপরদিকে রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে রাজশাহী থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচল করে। এছাড়া ঢাকা-পদ্মা সেতু-রাজবাড়ী রুটে একটি কমিউটার ট্রেন চালানোর কথাও ভাবছে রেলওয়ে।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে পদ্মসেতুতে রেলের সংযোগ নিঃসন্দেহে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এর মধ্য দিয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তো বটেই অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্তমান সরকারের উচ্চমান দর্শন এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে ভেতর থেকেই পরিবর্তন হচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখা গেলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন সফল হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।