রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
পবায় বর্তমান মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনকে অন্য কোন স্থানে বদলির আদেশ না দিয়েই নতুন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারির এক প্রজ্ঞাপনে দুর্গাপুর উপজেলার বিতর্কিত সেই মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনকে আবারও পবায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বদলি হয়ে পবা উপজেলায় যোগদান করবেন। কিন্তু বর্তমান কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনকে অন্য কোন স্থানে বদলির আদেশ দেয়া হয়নি। এখানে আবারো জটিলতার কথা ভাবছেন উপজেলা প্রশাসন। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বিষয়টি সঠিক করছেন না বলে সচেতনমহল মনে করেন। এরআগেও একবার পবায় তাকে বদলি করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি সেই সময় যোগদান করতে পারেন নি। এই কর্মকর্তাকে কেন্দ্র করে পবার জনগণের মাঝে বিরূপ ধারণা রয়েছে। অনেকটা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তিনি প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছেন।
এব্যাপারে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক সবনম শিরিন বলেন, পবা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে হাবিবা খাতুন কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু পবার বর্তমান মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনকে অন্য কোন স্থানে বদলির আদেশ দেয়া হয়নি। এই অবস্থায় দুর্গাপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুনকে অধিদপ্তর থেকে পবা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। ফাতেমা খাতুন এখনও যোগদান করেননি। এই পরিস্থিতিতে জটিলতার সৃষ্টি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধিদপ্তর যেভাবে বলবে আমাদেরকে সেভাবেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানা গেছে- দুর্গাপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় ওই উপজেলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকে তিনি তানোর উপজেলা থেকে দুর্গাপুর উপজেলায় যোগদান করেন। তিনি তানোর উপজেলায় প্রায় ৫ বছর চাকরি করেছেন।
তার আগে তিনি চারঘাট উপজেলায় ৬ বছর চাকরি করেন। চারঘাটে যাবার আগে ২০১০ সালের দিকে তিনি এই দুর্গাপুর উপজেলায় কয়েক মাস দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় দুর্গাপুরে হতদরিদ্রদের ঋণের টাকা বিতরণ নিয়ে তার অফিসে মারপিটের ঘটনা ঘটে। সেই মামলা এখনও চলমান রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে এক জাতীয় কর্মসূচির বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলোর মধ্যে বিতরণ না করার অভিযোগ রয়েছে। তখন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে থাকা জেন্ডার প্রমোটর ও প্রশিক্ষকদের সাথে কথা বলে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এসব বিতর্কিত কারণে এর আগেও পবায় আসতে পারেননি তিনি। গত ১৯ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিনি আবারো তদবির করে পবা উপজেলায় তার বদলি করিয়েছেন।
দুর্গাপুর উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন জানান, মন্ত্রণালয় থেকে আমার পবা উপজেলায় বদলি আদেশ হয়েছে কিন্তু সেটা পরিপূর্ণ হয় নাই। পবায় বর্তমানে কর্মরত হাবিবা খাতুনের বদলি হলেই আমি সেখানে যোগদান করবো। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার, এর আগে দুইবার পবায় আমার বদলি হবার পরও যোগদান করতে পারি নাই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলা আনা হয়েছে সেগুলো সম্পন্ন মিথ্যা। আমি সততার সহিত আমার কাজগুলো করেছি এবং ভবিষ্যতেও করতে চাই।
পবায় কর্মরত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুন জানান, ১৯ জানুয়ারি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ফাতেমা খাতুনকে পবা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আমার বদলির আদেশ পাই নাই। আমি বদলি আদেশের অপেক্ষায় আছি। এ বিষয়ে মন্ত্রনালয় যে নির্দেশনা দিবে সেই অনুসারে কাজ করব।