শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৩৪টি পরিবারের মাঝে বকনা গরু ও খাদ্যসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণি সম্পদের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগিদের মাঝে এসব বকনা গরু বিতরণ করা হয়।
উপকরণের মধ্যে ছিল ১০০ কেজি করে গবাদি পশুর খাদ্য, দুই প্যাকেট ভিটামিন ও মিনারেল ওষুধ। এছাড়াও দ্বিতীয় ধাপে আরো ৭৯ কেজি ৬শ’ গ্রাম খাদ্য এবং ভিটামিনসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ ও টিকা সরবরাহ করা হবে। গরুর ঘর নির্মাণের ৫ পাতা টিন, ৪টি ঘরের খুঁটি ও দুই টি করে রাবার ম্যাট সরবরাহ করা হবে।
অনুষ্ঠানে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত আমান আজিজ’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব গরু বিতরণ করেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা সামশুন্নাহারের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার সরকার।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারি, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আতোয়ার রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম, হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। কোরআন থেকে পাঠ করেন মাওলানা গোলাম মাওলা। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এমএনএম জুহুরুল হক, পাট কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, জাইকার পবা উপজেলা কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগম বলেন, সমাজের পিছিয়ে থাকা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়কে উন্নয়নের কাতারে নিয়ে আসার জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই একটি বকনা গরুর দ্বারা তার ভাগ্যের উন্নয়নের চাকা ঘোরাতে সম্ভব।
তিনি আরো বলেন যে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও তারা যেন পরবর্তীতে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ রেখে, নিজেদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে পারে। সেই লক্ষ্যে সরকার সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
পবার পারিলা ইউনিয়নের সুবিধাভোগী আদিবাসী নারী রিতা বিশ্বাস বলেন, বছর তিনেক আগে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আমাদের গরু, খাদ্য-ওষুধ, টিন আর ঘরের খুঁটি দেওয়া হয়েছে। সেটি পেয়ে আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। একটি বকনা গরু থেকে আমার তিনটি গরু হয়েছে। এর মধ্যে একটি গরু বিক্রি করে ঘর দিয়েছি। এখনো দুইটি গরু আমার গোয়াল ঘরে আছে।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী আরাফাত আমান আজিজ বলেন, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এই উদ্যোগ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অর্থনৈতিক ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার সরকার বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় যারা বিগত সময়ে সুবিধা পেয়েছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে ও সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এর জলন্ত উদাহরণ পারিলা ইউনিয়নের রীতা বিশ্বাস। সেই লক্ষ্যে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। এই বিতরণের পূর্বেও বকনা গরু, মুরগি, ভেড়া ও ষাড় গরু বিতরণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।