পবার খড়খড়ি হাটে ইজারাদারকে খাজনা আদায়ে বাধা প্রদানের অভিযোগ

আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২৪, ৮:৪৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ি হাট-বাজারের ইজারাদারকে খাজনা আদায়ে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন ইজারাদার মো. মেহেদী হাসান মন্টু।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, পবা উপজেলার খড়খড়ি হাট বাজারের ১৪৩১ বাংলা সনের সর্বোচ্চ দরে ইজারা নেন মো. মেহেদী হাসান মন্টু। এই হাট-বাজারকে কেন্দ্র করে প্রায় ৭৫-৮৫ জন মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়াও এ হাট-বাজারের প্রায় ৪০ জন শেয়ার হোল্ডার আছেন। শেয়ার হোল্ডারের মধ্যে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যও রয়েছেন।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তারা প্রতিদিন খাজনা আদায় করে আসছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টে দেশের পট পরিবর্তনের পর থেকেই একদল দুষ্কৃতিকারি ও সুবিধাবাদী হাটের দু’টি অফিস ভাংচুর ও পুড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি তারা এই হাট-বাজারে কেহ খাজনা দিবে না ঘোষণা দেয়। যদি কেহ খাজনা নিতে আসে তবে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে বলে জানায়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কয়েকদিন খাজনা আদায়ে বিরত থাকেন।

এরপর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে ১৩ আগস্ট আবারো খাজনা আদায় শুরু করলে সকাল ৭টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম করে একদল ছাত্রনামধারী বাহিনী সশস্ত্র অবস্থায় খাজনা আদায়কারিদের ওপর চড়াও হয়। এতে আদায়কারিরা প্রাণভয়ে খাজনা আদায় বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় শেয়ার হোল্ডারের কয়েকজন ওই ছাত্রদের সাথে কথা বলেন। ছাত্ররা জানায়, তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে এই হাটটিতে খাজনার নামে চাঁদাবাজি করা হয়। ইজারাদারের পক্ষ থেকে ছাত্রদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে, এটা চাঁদাবাজি নয়। যা আদায় করা হয়, তা ইজারাকৃত হাটের খাজনা। ছাত্ররা আরো বলেন, তাহলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে বলুন-আপনারা খাজনা আদায় করতে পারবেন, না বললে আমরা কোন মতেই খাজনা আদায় করতে দেব না।

ইজারাদারের পক্ষ থেকে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জসহ জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। এরপর ১৬ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনা ও বিজিবি সদস্যরা হাটে আসেন এবং সকলকে বুঝিয়ে বলেন, হাট-বাজার একটি সরকারি সম্পত্তি। যা ইজারা দিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় করা হয়। সেই মোতাবেক এই হাট-বাজারটিও ইজারা দেয়া হয়েছে। বিধায় ইজারাগ্রহণকারিরা খাজনা উঠাবেন। যদি আপনাদের কোন আপত্তি থাকে তা লিখিতভাবে উপজেলা অফিসে জানাবেন। আবারো ১৭ আগস্ট থেকে যথারীতি খাজনা আদায় করা হয়।

এরপর ২৩ আগস্ট সাকলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র পরিচয়ে খাজনা আদায়ের ছবি ও ভিডিও করেন। তারা খাজনাকে চাঁদাবাজি বলে দাবি করেন। পাশাপাশি খাজনা তোলার কিছু রশিদ বই নিয়ে যায় এবং খাজনাকে চাঁদাবাজি নামে সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন। তারা ২৪ আগস্ট হাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিলে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়ানোর জন্য সেদিন খাজনা আদায় বন্ধ রাখা হয়।

অভিযোগ থেকে আরো জানা গেছে, খড়খড়ি হাট-বাজারের খাজনা আদায়ে বাজারের কিছু মার্কেট মালিকরা জড়িত রয়েছে। মূলত তাদের ইন্ধনে ছাত্রদের বার বার ভুল বুঝিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযুক্ত মার্কেট মালিকরা হলেন, মো. সুজন মিয়া, মো. হুমায়ন, আব্দুল গফুর, জামালউদ্দিন দুখু, সোহেল মিয়া প্রমুখ।

এ ব্যাপারে ইজারাদার মেহেদী হাসান মন্টু বলেন, খড়খড়ি হাট-বাজার একটি কেন্দ্রিক এলাকা। এখানে দলবল নির্বিশেষে সবাই কাজ করেন। কারো শেয়ার আছে বা কেহ খাজনা আদায় করেন। বর্তমানে কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে সুবিধা নেওয়ার জন্য ছাত্রদের ভুল বুঝিয়ে ব্যবহার করছেন। যেখানে এই হাট-বাজার সংশ্লিষ্ট শতাধিক মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছে।

 

এব্যাপারে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, হাট-বাজার সরকারি সম্পত্তি। আর ইজারা দিয়েই হাট-বাজারের সরকারি রাজস্ব নিশ্চিত করা হয়। ইজারাকৃত কোন হাট-বাজারের টোল বা খাজনা আদায়ে বাধাদান দুঃখজনক। তবে ইজারার নামে কেহ জোরপূর্বক বেশি আদায় করলে এবং কারো অভিযোগ পেলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ