সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
দশ দিনে পবা উপজেলায় তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও মাটি কেটে বিক্রি করার অপরাধে পৃথক অভিযানে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় রাতের আঁধারে অভিযান চালিয়ে ২৭টি এক্সাভেটর (খননযন্ত্র) জব্দ করা হয়েছে। গভীর রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কওে ওইসব খননযস্ত্র জব্দ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার। ধৃতদের বালুবহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ১৫ (১) ধারায় জরিমানাও করা হয়।
শুধু পবা উপজেলাতেই নয়- রাজশাহীর সব উপজেলাতেই কৃষিজমি খনন করে পুকুর তৈরি করা হচ্ছে। যারা এই খনন কার্যের সাথে জড়িত তারা প্রভাবশালী। নানাভাবে প্রশাসনকে উপেক্ষা করে তারা কৃষিজমির ওপর খনন কাজ অব্যাহত রাখছে। এমনকি প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে রাতে খনন কাজ পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে কৃষি জমি কমতে আছে এবং একই সাথে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর অযাচিত ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় ইঞ্চি পরিমাণ জমিও অনাবাদি না রাখার আহবান চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বারবার খাদ্য নিরাপত্তার প্রসঙ্গও বারবার টেনে আনছেন, দেশের মানুষকে সতর্ক করছেন। বিশ্ব ব্যাংকও একই সতর্কতার কথা জানাচ্ছে। সংস্থাটি জানাচ্ছে, সারা বিশ্বজুড়েই নানা কারণে খাদ্য নিরপত্তার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। মহামারি করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত বিশ্বের দেশে দেশে প্রকটরূপে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু অনেক দেশই অর্থনৈতিক বিপর্যায়ের মুখে পড়েছে। পাকিস্তানসহ অনেক দেশে খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এ ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষি উৎপাদনের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাংলাদেশের কৃষি বৈশ্বিক অনেক মন্দা থেকে রক্ষা করে চলেছে। সেই কৃষিকে সুরক্ষিত রাখা সকলেরই দায়িত্ব।
পবার প্রশাসন কৃষি জমির রকম পরিবর্তরকানীদের বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযান পরিচালিত করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। অন্যান্য উপজেলায়ও কৃষিজমি সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রশাসন আরো কঠোর হবে এটাই প্রত্যাশা।