মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের বর্জনের মধ্েয অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা চলমান সংলাপের মধ্য দিয়ে গঠিতব্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
সরকারের তিন বছরপূর্তিতে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই প্রত্যাশার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারের তিন বছর পূর্তির সময়েই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর তার গঠিত ইসির অধীনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।”
রাষ্ট্রপতির চলমান উদ্েযাগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আশা করি সকল রাজনৈতিক দল মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে গঠিত নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখবেন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিবেন এবং দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবেন।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তাদের বর্জন ও প্রতিহতের হুমকির মধ্েয অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয় নিয়ে ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনা তিন বছর আগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “আপনারা জানেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা অবৈধ পথে ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ করেছি।”
দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে নিজের চেষ্টা চালানোর বিষয়টি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তখন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
“সংবিধানের আওতায় আমরা সবধরনের ছাড় দিতেও প্রস্তুত ছিলাম। এমনকি বিএনপি যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক, তাও আমরা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্ব সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি, বরং উনি সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেন।”
৫ জানুয়ারির ভোটে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছিল না, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
“বিএনপি জোট নির্বাচন বর্জন করলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দল এবং প্রার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সময় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত ছিল। সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি।”
পরের বছর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনে নাশকতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “৯২ দিন পার্টি কার্যালয়ে আরাম-আয়েশে অবস্থান করে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত আন্দোলনের নামে বিএনপি নেত্রী আবার জ্বালাও-পোড়াও-সন্ত্রাসী কর্মকা- উসকে দেন।”
তিনি বলেন, ওই তিন মাসে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে ২৩১ জন নিরীহ মানুষ নিহত এবং ১ হাজার ১৮০ জন আহত হন। তারা ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেল গাড়ি ও ৮টি লঞ্চে আগুন দেয়। ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাংচুর এবং ৬টি ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়।
“দেশবাসী তাদের এ সন্ত্রাসী কর্মকা- প্রত্যাখ্যান করেছেন, জনগণ এ ধরনের কর্মকা-ের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না,” বলেন শেখ হাসিনা।- বিডিনিউজ