মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
আড়াই মাস কেটে গেছে ইতোমধ্যে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন কয়েক দফা। সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক), স্থানীয় কাউন্সিলর, জেলা প্রশাসন ও রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। কিন্তু পরিদর্শনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে নগরীর সেখেরচক পদ্মাপাড়ের বাঁধ। শুরু হয় নি সংস্কার কাজ। পাড় ধসে পড়ায় অনেক আগেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বসবাসকারীরা। আর অনেকে ঝুঁকি নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন।
গত ২৯ অক্টোবর ওই এলাকায় আকস্মিকভাবে ধস দেখা দেয়। ধসের কারণে শহররক্ষা বাঁধের ওপরের প্রায় দুইশ মিটার সড়ক দেবে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাঁধ সংলগ্ন বাড়িঘর। এছাড়া সড়কের পাশের টাইলস বসানো ফুটপাতেরও একই অবস্থা। সড়ক সংলগ্ন সাতটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। যার মধ্যে তিনটি বাড়ির সীমানাপ্রাচীর রাস্তার সঙ্গেই দেবে গেছে। ধসের কারণে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে বর্তমানে সেই বিদ্যুতের খুঁটির তার সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকাবাসি নিজ উদ্যোগে সড়কের দুই পাশে বাঁশ দিয়ে বেঁধে দিয়েছে।
এদিকে বাঁধ ধসের আড়াইমাস কেটে গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাদের পক্ষ থেকে শুধু পরিদর্শন করা হয়েছে। রাসিক বলছে, বাঁধের যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তা মেরামত করে দিলে রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। আর পাউবো বলছে, নকশা জমা দেয়া হয়েছে। ডিজাইন আসছে। অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, এই ভাঙাস্থান অনেক বার পরিদর্শন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এসে এলাকা ও ক্ষতিগ্রস্তদের নামগুলো লেখে নিয়ে যায়। আর বলে যান, কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। তাদের এই আশ্বাসেই কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। তারপরেও কাজ শুরু করা হয়নি। আবার প্রথমের দিকে যে অবস্থা ছিলো তার থেকে বর্তমানে আরো দেবে গেছে। এর ফলে নদীর ধারের ব্লকগুলোর মধ্যেও ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধের এই অংশ অতি দ্রুত মেরামত না করা হলে বর্ষা আসলে শহর রক্ষা বাঁধের ধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জনি ইসলাম বলেন, ধসের কারণে বাড়ি ভেঙে যাওয়া কয়েকটি পরিবার অন্য জায়গায় ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। ভাঙনের পর থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সবাই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এতো দিনেও কাজ শুরু হয়নি।
এ ব্যাপারে পাউবো রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, বাঁধ সংস্কারের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নকশা জমা দেয়া হয়েছে। ডিজাইনের জন্য ঢাকা থেকে লোক এসে দেখে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা ডিজাইন পেয়ে যাবো। ডিজাইন পেলে আমরা অর্থ বরাদ্দের জন্য আবেদন করবো। তারপরে দরপত্র প্রকাশ করা হবে। সব প্রক্রিয়া শেষ হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, নদীর বাঁধ পাউবো মেরামত করে দিলে আমরা রাস্তার কাজ শুরু করবো। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পাউবোর মেরামতের পরে রাস্তার কাজ শুরু করা হবে।