বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
লিড সার্টিফাইড সবুজ কারখানার তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ১০০ কারখানার মধ্যে ৫০টিই এখন বাংলাদেশের। সোমবার (৬ ফ্রেব্রুয়ারি) বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খুবই আশাজাগানিয়া একটি প্রতিবেদন দৈনিক সোনার দেশসহ দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী সোমবার নতুন করে কেডিএস আইডিআর লিমিটেড নামে আরও একটা কারখানা প্লাটিনাম ক্যাটাগরিতে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’ স্বীকৃতি পেয়েছে। এটিসহ বিশ্বের সেরা পরিবেশবান্ধব ১০০ কারখানার তালিকায় অর্ধেকই এখন বাংলাদেশের। নতুন স্বীকৃতি পাওয়া কারখানাটি নিয়ে বাংলাদেশে সবুজ কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৭টিতে।
বিশ্বব্যাপি অর্থনীতির মন্দা পরিস্থিতির মধ্যে এটি অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে সেসব প্রতিষ্ঠানে যেসব শ্রমিক কাজ করেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ প্রাপ্য। কেননা, তাঁদের যৌথ প্রয়াসেই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ সুরক্ষা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের দেখাদেখি অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসবে আশা করি। আর পরিবেশবান্ধব কারখানার বিষয়টি কেবল তৈরি পোশাক খাতে সীমিত রাখলে চলবে না। কারখানাকে পরিবেশবান্ধব করতে বাড়তি খরচ হলেও ক্রেতারা পণ্যের দাম বেশি দেন না। যে বিদেশি ক্রেতারা কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে সোচ্চার, তাঁরা কেন পণ্যের ন্যায্য দাম দেবেন না সে বিষয়টি নিয়েও দেনদরবার করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। এ ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় উদ্যোগের প্রয়োজন আছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানা ধরনের সমালোচনা ছিল। বিশেষ করে পোশাক খাতের নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষা, শ্রমিকদের মজুরি ও তাদেন শ্রমঘণ্টার বিষয়গুলো সামনে চলে আসে। ক্রেতারা এ বিষয়গুলো নিয়ে বেশ সোচ্চার হয়ে ওঠে। অবশ্য সমস্যাগুলো দেশের পোশাকখাতে ব্যাপকভাবেই ছিল। একের পর এক ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে কিংবা ভবন ধসে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়। যা দেশের শিল্পকারখানার ভাবমূর্তি বিশ্ববাজারে সঙ্কটের মুখে পড়ে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে কারখানার কর্মপরিবেশ ভালো এবং পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ করতে কারখানা মালিকদের সাথে সরকারও এগিয়ে আসে। কারখানার কর্মপরিবেশ ভালো এবং পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ২০২১ সাল থেকে প্রথমবারের মতো পুরস্কার চালু করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
সবুজ কারখানার সুফল ইতোমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ববাজারের বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের গ্রহণযোগতা বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সাথে পোশাকখাতে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে এনেছে। কারখানার পরিবেশ ও শ্রমবান্ধব করার উদ্যোগ আরো এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা রইল।