পলাতক ইদ্রিস রাজাকারের প্রাণদণ্ড

আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০১৬, ১১:০৮ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক



একাত্তরে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে তখনকার রাজাকার বাহিনীর সদস্য মৌলভী ইদ্রিস আলী সরদারকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে এই রায় ঘোষণা করে।
রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা চার অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে আসামি ইদ্রিস আলী সরদারের সাজা কার্যকর করতে হবে। চার অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে ২০০ জনকে হত্যা এবং দ্বিতীয় অভিযোগে বহু মানুষকে হত্যা, নারীদের নির্যাতনের ঘটনায় ইদ্রিস আলীর সর্বোচ্চ সাজার রায় এসেছে। আর তৃতীয় অভিযোগে চারজনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার ঘটনায় তার আমৃত্যু কারাদ- এবং চতুর্থ অভিযোগে হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় সাত বছরের কারাদ-ের রায় দিয়েছে আদালত।
আসামি ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করে সাজা কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে। এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি মাওলানা সোলায়মান মোল্যা ওরফে সোলায়মান মৌলভী গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ কারণে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।
মামলার অভিযোগপত্র্রে বলা হয়, দুই আসামি একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ইদ্রিস তখন ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের স্থানীয় নেতা। আর সোলায়মান প্রথমে মুসলিম লীগ ও পরে জামিয়াতুল উলামায় ই-ইসলামীর নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা যে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে মানবতাবিরোধী কর্মকা- ঘটিয়েছিলেন, তা উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে।
আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। অন্যদিকে ইদ্রিসের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম বলেছেন, তার মক্কেল আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আত্মসমর্পণ করলে আপিলে খালাস পাবেন বলেই তার বিশ্বাস।
নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের মামলায় রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা যায়। তবে পলাতক ইদ্রিসকে সে সুযোগ নিতে হলে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ২৭টি মামলার ৪৬ আসামির মধ্যে মোট ২৮ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হল।- বিডিনিউজ