সোনার দেশ ডেস্ক :
ঢাকাসহ সারা দেশে দোকান ও বাজারে হাত বাড়ালেই মিলছে পলিথিন। পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে আনতে শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে কাঁচাবাজার ও সুপারশপে অভিযান পরিচালনা করবে সরকার। পুরো নভেম্বর মাসে এই অভিযান পরিচালিত হবে।
গত ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা। পরিবেশ ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ক্রেতাদের জন্য আজ থেকে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে সব সুপারশপে পরিবেশবান্ধব পাট ও কাপড়ের ব্যাগ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতার জাতীয় দৈনিকে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিষয়টিও ব্যাপকভাবে প্রচারণাসহ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বাজারে পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী বিতরণ, বাজারে বিদ্যমান পলিথিন ব্যাগসহ অন্যান্য পলিথিনজাত প্যাকেজিং সংগ্রহের জন্য বিন ও স্থায়ী নোটিশ বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বাকি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থায়ী নোটিশ বোর্ড বসানোর কাজ চলছে।
এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা কলেজের ছাত্র হেমায়েত উদ্দীন সাইফের সাথে। তিনি বলেন, আমরা বাজার পলিথিনে এনে ব্যাগটি ফেলে দেই। এই পলিথিনটি ম্যানহোলে গিয়ে আটকে যায়। বৃষ্টি হলেই পলিথিনের জন্য জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এদিকে, পলিথিনের শপিং নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। রাজধানীর চানখারপুল, সেগুনবাগিচা, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ী, সুপারশপে ঘুরে দেখা গেছে, পলিথিনের পরিবর্তে তারা টিস্যু ব্যাগে বিক্রি করছে।
চানখারপুল স্বপ্নের কর্মকর্তা রাফসান হাসান বলেন, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে টিস্যু ও পাটের ব্যাগে পণ্য বিক্রি করছি। ক্রেতারা পাটের ব্যাগের জন্য বাড়তি টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। একটি ব্যাগের দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। একটি ব্যাগ তো আর ফ্রি দেওয়া যায় না।
ব্যাগের টাকা না দিলে ব্যবসা কীভাবে চলবে? কাস্টমাররা যদি ব্যাগ কিনে নিয়ে আসে কিংবা ব্যাগের টাকা দেয় আমরা তাদের কাছে পোডাক্ট বিক্রি করব। আর ব্যাগের টাকা না দিলে তাদের কাছে পোডাক্ট বিক্রি করব না।
সেগুনবাগিচা আগোরায় সবজি কিনতে আসেন আহমাদুল। তিনি বলেন, আজ থেকে যে পলিথিন নিষিদ্ধ এটা জানি। তাই বাসা থেকে পুরাতন ব্যাগ নিয়ে এসেছি।
কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকার পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে কঠোর মনিটরিং করা হবে। পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে। শুধুমাত্র পলিথিনের শপিং ব্যাগ বন্ধ করা হচ্ছে। কোনও সুপারশপ পলিথিন শপিং ব্যাগ সরবরাহ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পাটের ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পাটের ব্যাগের সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে কাচা পাট রপ্তানি বন্ধ করা হবে।
তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি