মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি :
তিন ফসলি যেসব জমির বোরো ধান কেটে এখন রোপা আমন ধানের চারা রোপনের কথা; অথচ অনেক জমির বোরো ধান এখনো কাটতেই পারেননি কৃষক। সময়মত বোরো ধান পাকলেও আষাঢ়ের শুরু থেকে টানা বর্ষণে জমিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় একদিকে কৃষক কাটতে পারছেন না। আবার ধান গাছের গোড়া থেকে নতুন ধানগাছের জন্ম নিয়ে ‘ক্যাঁতাড়ি’ সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার পাবনার ঈশ্বরদীর বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে সরেজমিন এ দৃশ্য দেখা গেছে। উপজেলার বাঘইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠে বোরো ধান পেকে জমিতে নষ্ট হচ্ছে। জমিতে পানি জমে ছোট ছোট কচুরিপানা জন্মেছে। পাকা ধানের গাছের গোড়া থেকে নতুন গাছ জন্মেছে যাকে স্থানীয়ভাবে ‘ক্যঁতাড়ি’ বলা হয়।
ফলে পাকা ধান কাটারও কোন সুযোগ পাচ্ছেন না কৃষক। পাকা ধানের গোছা থেকে জমিতেই ঝরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের কষ্টের ফসল। কৃষকরা জানান, বোরো ধান কেটে একই জমিতে এখন রোপা আমন ধানের চারা রোপনের সময় পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ধান কাটতে না পেরে চারা রোপনের প্রস্তুতিও নেওয়া যায়নি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ মৌসুমে ঈশ্বরদীতে ২৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়, যার মধ্যে আবাদ হয়েছে ২৭৭৫ হেক্টর জমিতে। এসব জমির অধিকাংশ ধান কাটা হলেও এখনো ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ জমির ধান কাটতে পারেননি কৃষক।
এ মৌসুমে ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের কথা। কিন্তু জমিতে উৎপাদিত পাকা ধান নষ্ট হওয়ায় ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পুরণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, জমিতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় এখনো বাঘইল গ্রামের বেশির ভাগ কৃষক তাদের জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি।
উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ১০ থেকে ১৫ হেক্টর জমির ধান এখনো জলাবদ্ধতার মধ্যে আছে বলে জানান কৃষক ও কৃষি বিভাগ। বাঘইল গ্রামের কৃষক আমিন উদ্দিন বলেন, যে জমিতে এখন রোপা আমন ধানের চারা রোপন করার কথা সে জমিতে এখনো বোরো ধান কাটতে পারেনি তিনিসহ অনেকে।
উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন হীরক বলেন, এ বছর আষাঢ়ের শুরু থেকে টানা বর্ষনে কিছু জমিতে পানি জমে ধান কাটতে পারেননি কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, যেসব জমি থেকে এখনো বোরো ধান কাটা সম্ভব হয়নি সেসব জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ বিলম্বিত হতে পারে।