পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ইমরান খানকে সত্যিই হত্যা করা হবে?

আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও সামাজিকতার সব ক্ষেত্রেই ধস নেমেছে। ভঙ্গুর রাষ্ট্রের দ্বরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেশটি। দেশটির সাধারণ মানুষ খুবই কষ্টকর জীবন-যাপন করছে। নিত্যপ্রয়োজণীয় সব পণ্যেই নি¤œ আয়ের মানুষের প্রায় নাগালের বাইরে চলে গেছে। ক্ষুধা-দারিদ্রে জর্জরিত একটি দেশ। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ৪৭ শতাংশ। সমস্যা-সঙ্কটের এখানেই শেষ নয়Ñ ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠি দেশটিকে অস্থির করে রেখেছে। তারপরেও দেশটি জন্ম-স্বভাব থেকে একটুও সরে আসতে পারেনি। রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র ও শঠতার ধারা পুরোদমেই বিরাজ করছে। প্রকৃতঅর্থেই রাষ্ট্র হিসেবে দেশটিকে রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বারবারই বলছেন. তাকে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠি হত্যা করার চক্রান্ত করছে। ইতোমধ্যেই নানা মামলায় ফাঁসিয়ে ইমরান খানকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু দলটির নিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত কর্মি-সমর্থকগণ তাঁর গ্রেফতার রুখে দেয়। গ্রেফতারের ব্যাপারে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত গ্রেফতার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন। তদুপরি শাসকগোষ্ঠি ইমরানকে দমন করতে নানা ফন্দি- ফিকির করেই চলেছে।
ইমরান খানকে হত্যা করার অভিযোগ যা তিনি করেছেন তা যে অনেকটাই সত্য তা দেশটির স্বরাষ্ট্রন্ত্রী ভাষ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাসীন পিএমএল-এন দলের শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ইমরান খান দেশের রাজনীতিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন- যেখানে হয় তাকে খুন করা হবে, না হয় আমরা হব। সোমবার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এমন খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস নাউ।
শানসকগোষ্ঠি কেন ইমরান খানকে হত্যা করতে চায়? ২০২২ সালের এপ্রিলে এক অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর থেকে তিনি দেশটির প্রধান প্রধান শহরে একের পর এক সমাবেশ করে আসছিলেন। সেখানে তিনি তাকে হটানোর জন্য বিদেশি শক্তি ও বর্তমান ক্ষমতাসীনদের দোষারোপ করেন এবং দেশটির সাবেক সেনা প্রধানের ব্যাপক সমালোচনা করছিলেন। একই সাথে দ্রুতই জাতীয় নির্বাচন দাবিতে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
পাকিস্তানের ইতিহাস বলে দেশটির জাতীয় রাজনীতি সে দেশের সেনাবাহিনির ওপর নির্ভরশীল। কোনো রাজনৈতিক নেতা সে যত প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় হোক না কেন সেনাবাহিনির সমালোচনা করে তার টিকে থাকা মোটেও সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হত্যার শিকার হতে হয়েছে। পাকিস্তানে এটা হরহামেশাই হয়ে থাকে। ইমরান খানকে হত্যা করা হবে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইমরান খানের আশঙ্কা এবং দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য হত্যা- ষড়যন্ত্রে রাজনীতির সাক্ষ্য দেয়। পাকিস্তান যতই দুর্দশাগ্রস্ত হোক না কেন সেনাবাহিনির ইচ্ছের বাইরে গিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। পাকিস্তানে এই সত্যই বারবার স্পষ্ট হচ্ছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ