শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক:
একটা সময় ছিল যখন পৃথিবী ছিল একেবারে শুকনো, খটখটে। তবে ধীরে ধীরে পৃথিবীর চারিদিকে তৈরি হল মেঘের স্তর। সেই মেঘ থেকে শুরু হল টানা বৃষ্টি। এরপর পানির আগমন হয় পৃথিবীতে। গবেষকরা মনে করছেন ১.৬ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর মাটিতে এসেছিল পানির ধারা।
কুইনসল্যান্ডের একটি সংস্থা এই গবেষণা চালিয়েছে। তারা জানিয়েছে পৃথিবী একসময় পাথরে ভর্তি ছিল। সেই সময় এর উত্তাপ ছিল প্রায় সূর্যের সমান। সেখান থেকে যে মেঘের স্তর পৃথিবীতে ছুটে আসত তাকে নিমেষে ফের মেঘে পরিণত করে দিত পৃথিবী। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে কয়েকশো বছর ধরে। তবে ধীরে ধীরে পানির স্পর্শ পেয়ে শীতল হতে শুরু করে পৃথিবী।
গবেষকরা অনুমান করছে সেইসময় পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ১২৯২ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৭৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তাপমাত্রাকে কমাতে মেঘেদের বহু বছর ধরে সময় লাগে। কঠিন পাথরকে যেমন ধীরে ধীরে কমিয়ে নিয়ে আসা হয় ঠিক তেমনই পৃথিবী ধীরে ধীরে শীতল হয়েছে। গভীর খাদগুলিতে তৈরি হয়েছে সমুদ্র।
পৃথিবীতে পানির আবির্ভাবের পর থেকেই অক্সিজেন তৈরি হতে শুরু করে। তৈরি হয় শ্যাওলা। সেখান থেকে জন্ম হয় প্রাণের। পৃথিবী যে হারে উত্তপ্ত ছিল সেখান থেকে দ্রুত শীতল হওয়া এক ধরনের মিরাক্যাল। একই পরিস্থিতি হয়তো বাকি গ্রহের সঙ্গেও হয়েছে। তবে সেখানে পানি পাওয়া যায়নি। তাই সেগুলি প্রাণহীন অবস্থায় রয়ে গিয়েছে।
পৃথিবীতে শুরু থেকে পানি ছিল, নাকি বাইরের কোনও উৎস থেকে পানি এসেছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। কোনও কোনও বিজ্ঞানীর ধারণা, পৃথিবীতে প্রথম জীবের আবির্ভাব হওয়ার আগেই পানির উপস্থিতি ছিল। আবার কারও ধারণা, সৌরজগতে থাকা গ্রহাণুর মাধ্যমে পানি এসেছে পৃথিবীতে। সম্প্রতি রুটজার্স বিশ্ববিদ্যালয় নিউ ব্রান্সউইকের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, পৃথিবীতে পানি অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী তার গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পানি পেয়েছে। নতুন এই আবিষ্কার পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের ক্ষেত্রে নতুন তথ্য দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পৃথিবীতে পানির উৎসের সময় বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্যাথরিন বার্মিংহাম বলেন, পৃথিবীতে কখন পানি এসেছে, তা গ্রহবিজ্ঞানের জন্য একটি উত্তরহীন প্রশ্ন। যদি আমরা উত্তরটি জানি, তাহলে জীবন কখন ও কীভাবে বিকশিত হয়েছিল, তা আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারব। নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবী গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে পানির উপস্থিতি ছিল না। অনেক পরে পানির সন্ধান মেলে পৃথিবীতে।
তথ্যসূত্র আজকাল অনলাইন