বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ‘পানি ও পয়ঃনিস্কাশন খাতে শুদ্ধাচার ও সুশাসন বাস্তবায়নের অবস্থা, চ্যালেঞ্জ, সুযোগ ও করণীয়’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয়। সোমবার (২০ মে) দুপুরে রাজশাহী ওয়াসার সভাকক্ষে গবেষণাপ্রাপ্ত তথ্য, বিশ্লেষণ এবং সুপারিশসমূহের আলোকে ‘রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সুপেয় পানি ও পয়ঃনিস্কাশন খাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ, সুযোগ ও করণীয়’ শীর্ষক এক অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী সকলে পানি ও পয়ঃনিস্কাশন খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরিকল্পনা, বাজেট মনিটরিং, গণশুনানিতে নাগরিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং যথাযথ সমন্বয় দরকার বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
অ্যাডভাকেসি সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জাকীর হোসেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মো. রবিউল ইসলাম, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর সুলতানা আহমেদ সাগরিকা।
সভার শুরুতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পরিচিতি এবং ওয়াস প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা। সভায় গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনাসহ সভাটি সঞ্চালনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশন উইন ওয়াস প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী লিপি আমেনা। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার নির্বাহী পরিচালক ফয়জুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক সোনার দেশ এর সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, বাসস রাজশাহীর সিনিয়র রিপোর্টার ড, আইনুল হক, এনজিও ফোরামের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রবিউল হক, ডাসকোর প্রকল্প সমন্বয়কারী ফিরোজা খাতুনসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
আলোচনা সভায় রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকীর হোসেন বলেন, রাজশাহী ওয়াসা শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে কাজ করছে এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। রাজশাহী ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশন একসাথে বসে তাদের করণীয় ঠিক করেছে। সমন্বয় ছাড়া নগরের মানুষকে সেবা দেয়া সম্ভব নয়। ওয়াসার ওয়েব সাইটের মাধ্যমে একজন গ্রাহক তার বিল সম্পর্কে জানতে পারছেন এবং ব্যাংকের মাধ্যমে পানির বিল প্রদান করছেন। গ্রাহকসেবা নিশ্চিতে রাজশাহী ওয়াসা নিয়মিত গণশুনানির আয়োজন করে থাকে।
ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় সুপেয় পানি এবং পয়ঃনিস্কাশন খাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে তথা সুশাসন ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কিছু সুপারিশ প্রদান করে। যার মধ্যে- সুপেয় পানি ও পয়ঃনিস্কাশন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা; সেবার মূল্য তালিকা সকল ওয়ার্ডে প্রেরণ করা; নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করতে ব্যাপকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; প্রয়োজনে সিটিজেন চার্টার হালনাগাদ, সচেতনতামূলক তথ্য সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা;
পানি ও পয়ঃনিস্কাশন খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিভিন্ন সামাজিক জবাবদিহিতার পদ্ধতি যেমন: অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা, বাজেট মনিটরিং এবং গণশুনানীতে নাগরিকদের জানানো এবং অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা; ব্যবহারযোগ্য সহজে অভিযোগ দায়ের এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের রিড্রেস ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা; সাধারণ মানুষের জন্য অনলাইনে অভিযোগ করার পাশাপাশি বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযোগ বক্স স্থাপন করা; জরুরী পরিস্থিতিতে যেমন: প্রচন্ড তাপদাহে ও দুর্যোাগকালীন সময়ে পানি ও পয়ঃনিস্কাশন কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা;
রাজশাহী ওয়াসার আলাদা পানি ব্যাবস্থাপনা কৌশল প্রণয়নের বিষয়ে এবং পদ্মা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে নগরবাসীকে পানীয় জলের সরবরাহের প্রকল্প তৃণ্মুলের নগরবাসীর সাথে সিটি কর্পোরেশন ও ওয়াসার যৌথ মতবিনিময় করা এবং তাদের চাহিদা যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করা; এবং সিটি কর্পোরেশনের কন্সার্ভেন্সি বিভাগ, স্থানীয় সরকারের প্রকৌশল বিভাগ এবং ওয়াসার নিয়মিত সমন্বয়সভা আয়োজন করা ইত্যাদি।