পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে কি?

আপডেট: জুলাই ১০, ২০২৪, ৯:৫৫ অপরাহ্ণ

দেশে একের পর এক দুর্নীতি-কান্ড বেরিয়ে আসছে। সরকারের নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারি থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং বিপুল পরিমাণের সম্পদের খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব দুর্নীতি খবরে সারা দেশ জুড়ে হইচই পড়ে গেছে। একটি দুর্নীতির খবরের রেশ কাটতে না কাটতে অন্য দুর্নীতির খবর চলে আসছে। সর্বশেষ যে দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে এসেছে পিএসএসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর।
ইতোমধ্যেই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত অভিযোগে পিএসসির দুই উপ-পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এদের মধ্যে উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীও রয়েছে।
ধৃত ব্যক্তিরা ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পিএসসি। সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্মসচিব ড. আব্দুল আলীম খানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত করে পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি চাকরি নিয়ে যারা কর্মকর্তা হয়েছেন- তারা সিভিল সার্ভিসের জন্য অতি ভয়ঙ্কর। ভব্যিষতে এর নেতিবাচক প্রভাব যে, সিভিল সার্ভিসের গুনগত মান যে একেবারে তলানিতে নিয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। এর ফলে দেশ ও মানুষের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
১২ বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ধারাবহিকভাবে চলে আসলো অথচ এ ব্যাপারে পিএসসির ভূমিকা খুবই হতাশাজনক। পিএসসিতে যে শৃঙ্খলা নেই তা ভয়ঙ্কররূপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পূর্বেকার পিএসসির চেয়ারম্যানগণও কি এই চক্রের সাথে জড়িয়ে আছেন? যদি তাই না হবে ১২ বছরে বিষয়টি কারোরই নজরে আসলো না? এটা বিশ্বাস করতে ভীষণ কষ্ট হয়।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্ত কমিটির তদন্ত দোলাচলের মধ্যে যেন ঝুলে না যায় সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে। ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িয়ে আছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে জড়িতদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে সরকারের মালিকানায় নিতে হবে। দৃষ্টান্তমূল শাস্তি ছাড়া দুর্নীতির মহামারি প্রতিরোধ করা যাবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ