নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে ফসলি জমিতে নেমে পুকুর কাটার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের সবসার গ্রামে কৃষকরা এই কর্মসূচি পালন করেছেন। এতে ওই গ্রামসহ সূর্যপুর ও বেতকুড়ি গ্রামের কৃষকরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, কৃষক মো. ইমরান, আহসান হাবীব, মো. বাবলু মোল্লা, মো. ওমর ফারুক প্রমুখ।
মানববন্ধনে কৃষকরা বলেন, সবশেষ গত ১ মে রাতে এক্সকাভেটর নিয়ে আসে মিজানুর রহমানসহ ১০ থেকে ১২ জন। সেদিন এসে তারা মাটি কাটা শুরু করে। সেদিন দুপুরে উপজেলা প্রশাসন এসে পুকুর খনন বন্ধ করে দেয়। তবে এর পর থেকে তারা নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। তারা হুমকি দিয়ে বলছে, এক্সকাভেটর ঠিক করে পুকুর খনন করবে। প্রশাসন তারা ম্যানেজ করেছে।
ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ বিঘা জমির কিছু অংশ পুুকুর কাটার জন্য ঘেরাও করা হয়েছে। ওই জমির ওপর দিয়ে বিএমডিএর পাইপ ও বিদ্যুতের খুঁটি গেছে। ইতিমধ্যে পানির পাইপ লাইন ফেটে গেছে। ঘেরাও করা জমির ভেতরে ধান কেটে রাখা হয়েছে। এক্সকাভেটর জমির এক পাশে রাখা আছে।
কৃষক ইমরানের ১২ কাটা জমি ঘেরাও করা পুকুরে পড়েছে। তার ধান কাটা হয়েছে একদিন আগে। ধানগুলো এখনো জমিতে আছে। ইমরান বলছেন, পুকুর কাটা বন্ধ না করা গেলে তাঁর ১২ কাঠা জমি হারাতে হবে। এই জমির জন্য মিজান নামে এক ব্যক্তি ও তার লোকজন প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে।
মো. বাবলু মোল্লা নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমার মোট ২৫ শতক জমি আছে। এই জমি না দেওয়ার কারণে গত রোববার হাসুয়া নিয়ে তাড়া দিয়েছে। এরা বলছে, আমাদের সাইজ করতে পারলে নাকি এখানে তারা পুুকুর কাটতে পারবে। এখন আমরা ভয়ে আছি। টাকার লোভ দেখাচ্ছে।’
মো. ওমর ফারুক বলেন, তার এখানে দুই বিঘা জমি আছে। পুরো জমিটাই এখন হারানোর আশঙ্কায় আছেন। এ ছাড়া এই জমির দক্ষিণে তার আরও ১০ বিঘা জমি আছে। এই এলাকা দিয়ে অন্য এলাকার জমির পানি নেমে চলে যায় পাশের বারনই নদীতে। এখানে পুকুর হয়ে গেলে পানি নামার আর কোনো রাস্তা থাকবে না। পুরো এলাকা বর্ষাকালে প্লাবিত হয়ে যাবে।
কৃষক আহসান হাবীব বলেন, তারা গত ১ মে এলাকায় আতঙ্ক তৈরির জন্য রাতে ককটেল ফুটিয়েছে। এই জমিতে পুকুর হলে এই এলাকায় কোনো চাষ হবে না। কিন্তু ভয়ভীতি দেখিয়ে পুুকুর খনন করতে চাচ্ছে। এটা বিএনপিপন্থি কিছু মানুষ করছে।
এ বিষয়ে মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ওই জায়গাতে অভিযান চালিয়ে পুকুর কাটা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফসলি জমিতে পুকুর খনন করতে দিবেন না তারা।