বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিদেশে চাকরির নামে দালালের খপ্পরে পড়ে ৫ যুবক সর্বস্বান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম্য প্রধানরা সমধানের সময় নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। দালালের কাছে টাকা ফেরত চাওয়ায় উল্টা সেই প্রতারিত হওয়া ৬ যুবকের নামে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করছে সেই দালালের পরিবার।
প্রতারিত হওয়া যুবকেরা জানান, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার সরিষাবাড়ি গ্রামের মালোশিয়া প্রবাসী ইব্রাহিম খলিল বাবু, তার বাবা রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই ইয়াকুব আলীকে দিয়ে বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে দালালি ব্যবসা শুরু করে।
ইতোমধ্যে একই উপজেলার নতুন গাওপাড়া চাইপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে সেলিম হোসেন (৩৪), সরিষাবাড়ি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে আরিফ হোসেন (২৯) ও তার ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন (২১), আবুল কালাম আজাদের ছেলে ইমরান আলী (২২) এবং নাটোর জেলার হাসিমপুর গ্রামের সেকেন্দার মণ্ডলের ছেলে হৃদয় মন্ডল (২৬) কে ভিয়েতনামে চাকরি দেওয়ার নামে প্রত্যেক জনের নিকট থেকে চুক্তি মারফত ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা নেয় তারা।
টাকা নেওয়ার পর প্রবাসী ইব্রাহিম খলিল বাবু ভিয়েতনামের চাকরির ভিসা না দিয়ে ভ্রমণ ভিসা আমাদেরকে দেয়। আমরা ভিসা প্রাপ্ত হয়ে চালতি বছর ৯ সেপ্টেম্বর আমরা ৫ জন ভিয়েতনামের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। সেই দেশে গিয়ে ফানিচার কোম্পানিতে চাকরি দেয়। পরবর্তীতে ফানিচার কোম্পানির মালিক আমাদেরকে বলে, আমাদের দেশে কোন কাজের ভিসা হয় না। তোমরা এসেছো ভ্রমণ ভিসায়।
কিন্তু ভ্রমণ ভিসায় মেয়াদ আড়াই মাস। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। আর দেশের নিয়ম অনুযায়ী ভিসার মেয়াদের একদিন পার হলে বাংলাদেশি ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এই কথা শুনার পরে আমরা দেশে ফেরত যাবো বলে মালিককে জানায়। সে সময় মালিক তার নিজের গাড়িতে করে আমাদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। ২৩ অক্টোবর আমরা দেশে ফেরত আসি।
বিষয়টি গ্রাম্য প্রধানদের বিষয়টি জানায়। গ্রাম্য প্রধানরা আমাদের সমধান করে দিতে চেয়ে সমধান করতে না পেরে ১১ দিন পর বলে আমরা সমধান করতে পারবো না। এরপর ২৮ অক্টোবর সকালে তাদের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি আমরা তাদেরকে বলি। অথচ ৪ নভেম্বর দালালের চাচাতো ভাই মকলেসুর রহমান বাদি হয়ে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করে। এবং পুঠিয়া থানা একটি অভিযোগ দাখিল করে।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, আমাদের সাথে ইয়াকুব ও তার বাবা রফিকুল ইসলাম ভিয়েতনামে ভালো কোম্পানিতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে আমাদের প্রত্যেক জনের নিকট থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয়। আর মেডিকেল বাবদ ১১ হাজার টাকা নেয় কিন্তু কোন পরীক্ষা করায়নি।
কিন্তু আমারা বিদেশে গিয়ে জানতে পারি আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। চাকরির ভিসার পরিবর্তে ভ্রমণ ভিসা দিয়ে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমরা বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পথে বসেছি। বিষয়টি গ্রাম্য প্রধানদের আমরা জানায়, কিন্ত উনারা সমধান করে দিতে ব্যর্থ হয়।
আমরা এখন আইনের আশ্রয় নেব। কিন্তু প্রতারকরা আবার মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
গ্রামের মসজিদ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস জানান, তারা বিদেশে চাকরির নামে প্রতারিত হয়েছে। বিষয় জানার পর আমরা সমধানের চেষ্টা করি। কিন্তু প্রবাসী ইব্রাহিম খলিল বাবু জানিয়েছে, তাদেরকে যে কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে তারা কাজ না করায় ১৫ হাজার ইউএস টাকা লোকশান হয়েছে। তাই তাদের টাকা ফেরত পাবে না। আবার লোকশানের সেই টাকাও তাদেরকে দিতে হবে। এই সব কারণে সেই বিষয়টি সমধান করা সম্ভব হয়নি।
পুঠিয়া থানার এএসআই শুকুর আলী জানান, ৬ যুবকের নামে আদালতে মামলার কারার পর। আবার থানায় এসে অভিযোগ করেছে ইয়াকুব আলী। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঘটস্থলে গিয়েছিলাম। তাদেরকে বলেছি, যেহেতু আদালতে মামলা করেছেন। তাই সেই একই মামলা থানার হওয়ার সুযোগ নাই।#