বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক:
পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হতে পারে ২০২৩, এ নিয়ে আগে থেকেই আলোচনা চলছিল। অবশেষে বিষয়টি নিশ্চিত করলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পরিষেবা সংস্থা। তারা জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রকৃতির এল নিনো দশা।
ইইউ’র জলবায়ু পরিষেবা জানিয়েছে, মানুষ প্রচুর পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো শুরুর আগে দীর্ঘমেয়াদী গড়ের তুলনায় গত বছরের তাপমাত্রা অন্তত ১ দশমিক ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
বিবিসির বিশ্লেষণ বলছে, ২০২৩ সালে জুলাই মাস থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৈশ্বিক বাতাসের তাপমাত্রা অন্যান্য বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি দেখা গেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রাও আগের রেকর্ডগুলো ভেঙে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস গত সপ্তাহে জানায়, দেশটির ইতিহাসে ২য় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর গেছে ২০২৩।
টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু ডেসলার এক নোটে বলেছেন, ২০২৩ সাল রেকর্ডভাঙা বছর ছিল ঠিক, কিন্তু এটি যে পরিমাণে আগের রেকর্ড ভেঙেছে, তা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।
বিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়েছিলেন, বর্তমান পৃথিবী ১০০ বছর আগের তুলনায় অনেকটাই উষ্ণ। কিন্তু ১২ মাস আগেও বিশ্বের বড় কোনো বিজ্ঞান সংস্থা আন্দাজ করতে পারেনি, ২০২৩ সাল হবে ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
বছরটির প্রথম কয়েক মাসে অল্প কিছু দিনই বাতাসের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছিল। কিন্তু বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এসেই শুরু হয় রেকর্ড ভাঙার ঝড়। এসময় প্রায় প্রতিদিনই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হয়ে উঠেছিল স্বাভাবিক ঘটনা।
ইইউ’র কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের তথ্য থেকে জানা যায়, গত বছর ২০০রও বেশি দিন দৈনিক বৈশ্বিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
এই সাম্প্রতিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে এল নিনো পরিস্থিতির ভূমিকাকে দায়ী করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এল নিনো কী?
পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পেরু-ইকুয়েডর উপকূল বরাবর কোনো কোনো বছর এক প্রকার দক্ষিণমুখী উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। এটিকে এল নিনো বলা হয়ে থাকে। এর বিপরীত দশার নাম লা নিনা। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল সামুদ্রিক স্রোত তৈরি হয়।
সাধারত চার থেকে ১০ বছর পরপর এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি সৃষ্টি হলে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং কোনো কোনো এলাকায় খরাও দেখা দিতে পারে।
সবশেষ ২০১৮-১৯ সালে দেখা দিয়েছিল এই পরিস্থিতি।
তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ