পৃথিবীর রহস্যময় ১০ স্থান

আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০১৬, ১০:৪২ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক



সমগ্র পৃথিবীতে রহস্যের শেষ নেই। পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে যার উৎপত্তি কিংবা গঠন নিয়ে আজও রহস্য রয়ে গেছে।
ফলে সেসব স্থান অতি-প্রাকৃতিক কিংবা রহস্যময় স্থান হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। চলুন জেনে নিই এমন ১০টি স্থান সম্পর্কে।
কানো ক্রিসটেলস, কলোম্বিয়া : কানো ক্রিসটেলস কলোম্বিয়ার একটি নদী। তবে এটি সাধারণ কোনো নদী নয়। এটাকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর নদী বলা হয়। বছরের অধিকংশ সময় এটা সাধারণ নদীর মতোই থাকে, তবে খুব অল্প সময়ের জন্য এর রুপ সম্পূর্ণ বদলে যায়। মূলত সেপ্টেম্বর এবং নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় এমনটি হয়। এ সময় নদীর পানিতে রঙের বাহার দেখা যায়। লাল, গোলাপি, নীল, সবুজ এবং হলুদ রঙের এর অপূর্ব সমন্বয় এখানে দেখা যায়।
মাউন্ট সাঙ্কিংসান, চিন : এটি চিনের তাওবাদী ধর্মানুসারীদের তীর্থস্থান। এটাকে স্রষ্টার বাগান বলেও অভিহিত করা হয়। এই এলাকায় অদ্ভুত সব আকারের গ্রানাইট পাথরের পিলার দেখা যায়। এখানে বছরের প্রায় দুইশ দিনই কুয়াশায় মোড়া থাকে, যা এটাকে একটি স্বর্গীয় অনুভূতির যোগান দেয়।
ফ্লাই গেইসার, যুক্তরাষ্ট্র : ফ্লাই গেইসার যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা মরুভূমিতে অবস্থিত। এটি মূলত তিনটি ছোট পাহাড়ের একটি মিলনস্থান যা প্রতিনিয়ত পাঁচ ফিট পানি ওপরের দিকে ছিটিয়ে যাচ্ছে। এটার গায়ে যে মহনীয় রঙ আছে, তা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এখানে আপনি চাইলেই ভ্রমণ করতে পারবেন না। এটা বক্তিগত সম্পত্তির ওপর হওয়ায় এটা এখনো পৃথিবীর কাছে গোপন একটি জায়গা। কোনো পর্যটকের এখানে যাবার অনুমতি নেই।
অওকিগাহারা, জাপান : অওকিগাহারা, জাপানের ফুজি পর্বতমালার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ৩৫ বর্গ কিলোমিটারের একটি জঙ্গল। এটি সি অব ট্রিজ অথবা গাছের সমুদ্র নামেও পরিচিত। কিছু অদ্ভুত পাথর এবং কোনো প্রাণের অস্তিত্ব না থাকাতে সব সময় সুনসান নীরব এ বনটি পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। জাপানি পুরাণ মতে, এ বনে প্রেতাত্মারা ঘুরে বেরায় এবং এটি আত্মহত্যা করার জায়গা হিসেবে বিবেচিত। এই বন থেকে প্রতি বছর ১০০’র বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল, আটলান্টিক মহাসাগর : বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কথা কমবেশি সবাই জানি। যা নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। যেখান বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হয়। অনেকে মনে করেন ওই সকল অন্তর্ধানের কারণ নিছক দূর্ঘটনা, যার কারণ হতে পারে প্রাকৃতিক দূর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতা। আবার চলতি উপকথা অনুসারে এসবের পেছনে দায়ী হল অতিপ্রাকৃতিক কোনো শক্তি বা ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর উপস্থিতি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবুও এখন পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সবকিছু নিছক অনুমান।
মগুইচেং, চিন : মগুইচেং চিনের জিনঝিয়াং মরুভূমিতে অবস্থিত। এটার আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় শয়তানের শহর। এখানের লোকজন অদ্ভুত সব ঘটনা দেখেছেন বলে দাবি করেন। পর্যটকরা এখানে বাতাসে দূর থেকে বিভিন্ন আজব আজব সুর ভেসে আসতে শুনেছেন। কখনো বাচ্চার কান্না আবার কখনো বাঘের গর্জন শুনেছেন কেউ কেউ। তবে এই শব্দের উৎস কেউই এখনো খুঁজে পাননি।
রিচাট স্ট্রাকচার, মৌরিতানিয়া : রিচাট স্ট্রাকচার আবার সাহারার চোখ নামেও পরিচিত। এটি সাহারা মরুভূমিতে প্রায় ত্রিশ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এটা মহাকাশ থেকেও দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, এটা হয়তো অগ্নুৎপাত এর ফলে তৈরি হয়েছে। কিন্তু এটা নিয়ে এখনো রহস্য রয়েই যায় যে, এটা কেন পুরোপুরি বৃত্তাকার আর এর বলয়গুলো কেনইবা সমান দূরত্বের। যদি প্রাকৃতিক হতো তবে পুরোপুরি বৃত্তাকার হওয়ার কথা নয়।
পামুক্কালের ট্রাভেরটাইন পুল, তুরস্ক : পামুক্কালের ট্রাভেরটাইন পুল তুরস্কের একটি বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান। হাজার বছর আগে এ এলাকায় একের পর এক প্রচ- ভূমিকম্প হয়ে মাটিতে অনেক ফাটল সৃষ্টি করেছিল। এবং সেখান দিয়ে মাটির নিচের ক্যালসিয়াম কার্বনেট ভর্তি গরম পানি বেরিয়ে এসে ওপরে জমা হতে হতে সাদা সোপানের সৃষ্টি হয়।
ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি, অ্যান্টার্কটিকা : ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালিকে পৃথিবীর সব থেকে গোপনীয় জায়গা হিসেবে ধরা হয়। এটার সম্পর্কে মানুষ খুব কমই জানে। এটা সম্ভবত পৃথিবীর সব থেকে শুষ্ক জায়গা। অ্যান্টার্কটিকা বরফ ও তুষারের মধ্যস্থলে অবস্থিত হলেও প্রতিবছর এখানে মাত্র ৪ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। কিছু শৈবাল ও মস জাতীয় উদ্ভিদ ছাড়া আর কোনো উদ্ভিদ জন্মায় না। বিজ্ঞানীরা এটার আবহাওয়াকে মঙ্গল গ্রহের আবহাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেন।
মাউন্ট রোরাইমা, ব্রাজিল : মাউন্ট রোরাইমা অস্বাভাবিক আকারের একটি পর্বত। সাধারণ পর্বতের একটি সূচালো শীর্ষ থাকে কিন্তু মাউন্ট রোরাইমা এমন নয়। এটি একটি সমতল শীর্ষ বিশিষ্ট পর্বত। এটার স্থানীয় নাম টিপুই। বছরের অধিকংশ সময় এটি মেঘে ঢাকা থাকে। ভেনিজুয়েলা, ব্রাজিল আর গায়ানা এই তিনটি দেশের সীমান্ত জুড়ে এর অবস্থান। তবে আপনি শুধু ভেনিজুয়েলা সীমান্ত দিয়েই এটাতে যেতে পারবেন। কিন্তু কারো ধারণা নেই এই পর্বতটি কেনইবা এমন অদ্ভূতুরে গড়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ