বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
আমানুল হক আমান, বাঘা
৮৫ বছরের বৃদ্ধ নুর মোহাম্মদ। পাঁচ ছেলের সংসারে জুটে না তার দু-বেলা দু-মুঠো ভাত। সম্মানের ভয় ও বয়সের ভারে নামতেও পারেন নি ভিক্ষা করতে। কিন্তু পেটের ক্ষুদা তো আর বয়স বা সম্মান মানে না। তাই বাধ্য হয়ে রোগি সেজে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছেন নুর মোহাম্মদ। এভাবেই চলছে তার ছয় মাস।
বৃদ্ধ নুর মোহাম্মদের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মিলিকবাঘা গ্রামে। বিশেষ কোন অসুখ না থাকা সত্তেও তিনি বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয় মাস ধরে ভর্তি আছেন।
নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রাজিয়া বেগম। ছয় সন্তানের জননী হয়েও তিনি ৭০ বছর বয়সে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। কাজের টাকা ও একমাত্র মেয়ের কিছু সহযোগিতায় খাওয়া-পরা চলে তার। তিনি বলেন, আমার স্বামীর কোনো আয় নেই। মাসে ৪শ টাকা বয়স্কভাতা পান। এছাড়া বাড়ির ১০ কাঠা ভিটায় পাঁচ ছেলে ঘর করে বসবাস করছে। কিন্তু তারা কোন ভাত-কাপড় না দেওয়ার কারণে আমার স্বামী অসুস্থতার অভিনয় করে ছয় মাস থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএ ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেন, নুর মোহাম্মদ গত ছয় মাস ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার বিশেষ কোনো অসুখ নেই। বয়স হওয়ার কারণে কিছু ভিটামিন দেয়া হচ্ছে। তার প্রধান সমস্যা পেটের ক্ষুদা। কোন কোন সময় তাকে রিলিজ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু হাত-পা ধরে কান্নাকাটি শুরু করে। ফলে এভাবে ছয় মাস ধরে তিনি এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা খাতুন লতা বলেন, বিষয়টি জানার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নুর মোহাম্মদকে বৃহস্পতিবার দেখতে গিয়েছিলাম। তবে তার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে তাকে বাড়িতে নেয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান।