রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
ডিএম রাশেদ পোরশা (নওগাঁ) :
নওগাঁর পোরশা উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন কৃষকরা। কৃষকদের ঘরে ঘরে বইছে এখন নবান্ন উৎসব উদযাপনের প্রস্ততি। উপজেলার আবাদি জমিগুলোতে এখন সোনালী ধানের ঝিলিক পড়েছে। বাতাসে বইছে আমনের সুঘ্রাণ। আর কৃষকের মুখে ফুটেছে ফসলের হাসি।
পোরশা উপজেলার মানুষ আশ্বিন ও কার্তিক মাসকে অভাবের মাস বলে থাকেন। অভাবের এ দুই মাস শেষ হয়ে এখন অগ্রহায়ণ মাস চলছে। কষ্টের ফসল ধান বাড়িতে উঠতে শুরু করেছে, তাই কৃষকরা যেন শত অভাবের মাঝেও সুখের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন। এখন প্রতিটি কৃষক ও গৃহস্থের বাড়িতে চলছে নবান্ন উৎসব উদযাপনরে প্রস্ততি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে পোরশা উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ১৫ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে চাষ হয় ১৫ হাজার ২৯০ হেক্টর জমি। চলতি মৌসুমে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ১৬৮ টন।
এদিকে সোনালী ফসল আমন ধানকে ঘিরে নানান স্বপ্ন বাস্তবায়নের জাল বুনেছেন কৃষকরা। কেউ কেউ নতুন ধানের চালের আটার ক্ষীর ও ভাপা পিঠা খাওয়ায় ব্যস্ত। কেউ বা আবার করছেন রকমারি পিঠা-পুলি আর সুস্বাধু পায়েস। কেউ কিনবেন নতুন নতুন জামা কাপড়, কেউ ডাকছেন মেয়ে জামাইকে, কেউ কেউ দাওয়াত করে খাওয়াবেন প্রিয়জনদের। সর্বোপরি এ উপজেলার গ্রামে গ্রামে ও মহল্লার প্রতিটি কৃষক ও গৃহস্থের পরিবারে এখন রোপা আমন ধানকে ঘিরে চলছে নানান উৎসব আর নবান্নের আমেজ।
সময়মত আকাশের বৃষ্টি পাওয়ায় ও প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা। ধান মেড়েছেন এমন কয়েকজন কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবছর প্রতি বিঘায় (৩৩ শতক) জমিতে ১৭-২০ মণ করে ধানের ফলন হচ্ছে। আবার কিছু কিছু জমিতে ২২-২৪ মণ পর্যন্ত ধানের ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
গত রোববার উপজেলার শিশা বাজারে প্রতি মণ স্বর্ণা জাতরে ধান বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ব্রিধান বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
উপজেলার সহড়ন্দ গ্রামের কৃষক হারুনুর রশিদ ও বলদাহার গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, এবছর ধানের ফলন যেমন ভাল, তেমনি ধানের দামও ভাল রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রশীদ জানান, চলতি মৌসুমে ধান চাষে তেমন বাড়তি খরচ করতে হয়নি কৃষকদের। এবছর ধানের ফলন ভাল হচ্ছে। অন্যদিকে ধানের দামও বেশ ভাল রয়েছে। কৃষকরা লাভবান হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। ##