শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধি :
নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল পোরশা উপজেলার মর্শিদপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা সিরাজপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামের এক যুবক বস্তায় আদা চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন। এলাকায় তিনি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং স্বপ্ন দেখছেন অধিক লাভের।
জানা যায়, বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির প্রয়োজন নেই। বাড়ির আঙিনায় বা বাড়ির পাশের পতিত জায়গাতেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষাবাদ করা যায়। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার কোন ভয় নেই।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সহযেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বাড়ির উঠান, প্রাচীরের কোল ঘেঁষে বা বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি রাখা যায়। এর জন্যে আলাদা কোন জমির প্রয়োজন হয় না।
আদাচাষী যুবক আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে আন্তঃফসল হিসেবে সিমের টালার নিচে ২ হাজার বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন তিনি। সিমের চালার নিচে হওয়ায় আদা চাষ করতে বাড়তি জায়গার প্রয়োজন হয়নি। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ বেশ লাভজনক বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, তার সিমের টালার জায়গার আনুমানিক পরিমান হবে ১০ শতাংশ। এই জায়গাতেই তিনি ২ হাজার বস্তা আদা গত বছর চাষ করেছিলেন। তার খরচ হয়েছে প্রতি বস্তায় ৫০ টাকা। সে হিসাবে তার সর্বমোট খরচ হয়েছে ১লক্ষ টাকা।
প্রতি বস্তায় ১ থেকে সোয়া কেজি পর্যন্ত আদার ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন। তার ২ হাজার বস্তায় মোট আড়াই টন ফলনের আশা করছেন তিনি। বর্তমান বাজারে নতুন আদার দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। অন্যদিকে পুরাতন আদার দাম প্রতি কেজি ২২০-২৫০টাকা।
বর্তমান বাজার অনুযায়ী তার উৎপাদিত আদা বিক্রি করলে তিনি পাবেন ৩ লক্ষাধিক টাকা। খরচ বাদে তার আয় হবে ২ লক্ষাধিক টাকা। তবে আদা সংরক্ষণ করে রাখতে পারলে পরবর্তীতে তিনি দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি অফিসার সেলিম রেজা জানান, কৃষকরা যাতে আন্তঃফসল হিসেবে বা বাড়ির পাশের পতিত জায়গায় আদা চাষ করে লাভবান হতে পারেন সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের। আদা চাষ করতে খরচ কম। এ ফসলে রোগবালাই কম হওয়ায় অধিক লাভবান হওয়া যায়। আদাচাষী আনোয়ার হোসেনকে তিনি সব সময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলেও তিনি জানান।