বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
আমানুল হক আমান, বাঘা
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ক্ষ্যাপা বাবার আশ্রমে সেবায়েতের কাজ করেন রঞ্জন প্রমানিক (৬৭)। তিনি উপজেলার আড়ানী পৌর বাজার সংলগ্ন হিন্দুপাড়া মহল্লার মৃত রঘুনাথ প্রামানিকের ছেলে। দেশে তীব্র শীত সইতে না পেরে প্রতিদিন শত শত মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন, আবার অনেকে মারাও যাচ্ছেন। অথচ রঞ্জন প্রমানিক ৪২ বছর ধরে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে খালি শরীরে সকল কাজকর্ম করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত শরীরে শুধু লাল শালু ও ঘাড়ের ওপর আরেকটি লাল শালু ছাড়া কোন প্রকার পোশাক ব্যবহার করে না। তীব্র শীতের মাঝেও শীতবস্ত্র ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। তিনি পেশায় একজন সেবায়েত। তিনি আট বছর বয়স থেকে আড়ানী ক্ষ্যাপা বাবার আশ্রমে সেবায়েত হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯২ সালে আশ্রমে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছিল। এসময় জিতেন্দ্রনাথ চৌধুরীর (পাগলা বাবা) সঙ্গে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ থানার চুনাখালী মুন্দিরে আশ্রয় নেয়। সেখানে ২১ বছর অবস্থান করার পর প্রায় দেড় বছর আগে তিনি আবারও আড়ানী ক্ষ্যাপা বাবার আশ্রমে সেবায়েতের কাজে নিয়োজিত হয়েছেন।
রঞ্জন প্রামানিক বলেন, দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। ছোট বেলা থেকে পোশাক ছাড়াই চলাচল করতে করতে এমনটা হয়েছে। তাই পোশাক ছাড়াই ৪২ বছর ধরে খালি শরীরে থাকা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সকলে শীত শীত করে কাতর কিন্তু শীত কি তা আমি বুঝতে পারি না। শীত-গরম সকল মৌসুমে একইভাবে থাকি। গরমও কি বুঝতে পারি না। তবে তিনি নিরামিশ ছাড়া মাছ-মাংস খায় না। তার স্ত্রী তৃপ্তি রানী প্রামানিক গৃহীনি। দুই ছেলে তারা ভারতেই থাকে বলে জানান তিনি।
আড়ানী আশ্রমের সাধক জিতেন্দ্রনাথ চৌধুরী (পাগলা বাবা) বলেন, রঞ্জন ছোট বেলা থেকে খালি গায়ে থাকতে অভ্যস্থ। এখনও একই অবস্থা। সে আমার সঙ্গে রয়েছে প্রায় ৪২ বছর যাবত। শীত ও গরম মৌসুমে খালি গায়েই থাকে রঞ্জন।