রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
চেয়ারম্যান এ এম রফিক উল্লাহ। তার পাসপোর্ট সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
পাবনা প্রতিনিধি :
প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসায় বিদেশে থাকা ব্যক্তিকে মামলার আসামী করে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে পাবনার আমিনপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর পরিবার অবিলম্বে মামলা থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি হলেন আমিনপুর থানার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ এম রফিক উল্লাহ (৬৫)। তিনি সংশ্লিষ্ট থানার রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা।
১৯৯৭ সাল থেকে পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বর্তমানেও তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
এ এম রফিক উল্লাহ’র পরিবারের দাবি, তার প্রতিবন্ধী ছোট সন্তান অনেকদিন ধরে অসুস্থ্য। ফলে সুচিকিৎসার জন্য নিয়মিত ভারতে চিকিৎসা করাতে যান রফিক উল্লাহ। গত বছরের ৩ আগস্ট সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভারতে যান তিনি। চিকিৎসা শেষে ১৭ আগষ্ট দেশে ফেরেন। এরপর চলতি বছরের ১১ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আমিনপুর থানা পুলিশ। পরে গত বছরের ৪ আগস্ট কাশিনাথপুর মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলায় আসামী করে পুলিশ।
চেয়ারম্যান এ এম রফিক উল্লাহ’র পরিবারের অভিযোগ, ছাত্রদের মারামারির ঘটনার দিন ৪ আগস্ট তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে ছিলেন। তাকে হয়রানি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তৎকালীন ঘটনার মামলার আসামী করেছেন। তাই অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনের কাছে তাঁরা মামলা থেকে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ এম রফিকুল্লাহ’র পাসপোর্টে দেখা গেছে, তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে যাওয়া-আসা করেন। গত ৩ আগস্ট সর্বশেষ ভারতে যান তিনি। চিকিৎসা শেষে ১১ আগস্ট দেশে ফিরে আসেন। পাসপোর্টে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের সিল রয়েছে। তার কাগজপত্র বলছে, যেদিনের ঘটনায় মামলার আসামি হয়েছেন, তিনি সেই সময় দিল্লিতে ছিলেন।
এ এম রফিক উল্লাহ’র স্ত্রী কামরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘তাঁর স্বামী এলাকায় খুবই জনপ্রিয় একজন মানুষ। তিনি বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। ফলে একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এ কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়েছে।’
কামরুন্নাহার বেগম আরো বলেন, ‘৩ আগস্ট তার স্বামী ভারতে গেলে কিভাবে ৪ আগস্ট তিনি মারামারি করলেন। কিভাবেই বা মামলার আসামী হলেন। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। একইসঙ্গে দ্রুত মামলা থেকে তাঁর স্বামীকে মুক্তি দেবার দাবি জানান তিনি।’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আমিনপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পারভেজ মিয়া বলেন, ‘মুল মামলার এজাহারে তাঁর নাম নেই। সন্দেহভাজন আসামী হিসাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তিনি বিদেশে থাকলে তথ্য প্রমানাদি দেখে চুড়ান্ত প্রতিবেদনে তাঁর নাম বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলা হয় একমাস পর ৫ সেপ্টেম্বর। মামলার বাদি হলেন স্থানীয় বাসিন্দা রবিন মৃধা। ওই মামলায় নামীয় আসামি ৬২ জন এবং অজ্ঞাতনামা এক থেকে দেড়শ’ জন।
এ বিষয়ে মামলার বাদি রবিন মৃধার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
#