মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:
ইদের ছুটি শেষে প্রচণ্ড তাপদাহকে উপেক্ষা করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে নওগাঁর মানুষরা। বিগত বছরের তুলনায় এরাবরই প্রথম প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কঠোর তৎপরতায় নির্ধারিত ভাড়ায় টিকেট কেটে বিনা হয়রানিতে যে যার কর্মস্থলের দিকে ছুটছেন। বিশেষ করে অধিকাংশ মানুষই ফিরছেন ঢাকায়। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে হয়রানি, ভোগান্তি ও অতিরিক্ত টাকা ছাড়াই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে পারছেন বলে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
শাহ ফতেহ্ আলী বাস যোগে নওগাঁ থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রী শাহীন হোসেন জানান এবার বাস কাউন্টারে সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত ভাড়াতেই টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে না। বরং নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কিছু টাকা কম নেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এবার কাউন্টারে এসে কোন প্রকারের হয়রানি ও ভোগান্তি ছাড়াই টিকেট পাওয়া যাচ্ছে এবং ফিরতি পথে সড়কে তেমন একটা যানজট না থাকার কারণে সময় মতো বাস চলাচল করছে।
নন ব্র্যান্ড রকি বাসে নওগাঁ থেকে ঢাকাগামী রাণীনগর উপজেলার যাত্রী হোসনে আরা জানান নামিদামি ব্র্যান্ডের বাসের টিকিট না পাওয়ায় রকি বাসে করে সরকারের নির্ধারিত ভাড়া ৬৮০ টাকায় তিনি ঢাকায় নিজ কর্মস্থলে ফিরছেন। এবার ইদে বাড়ি আসতে এবং ফিরতি পথে বাসের টিকিটের জন্য কোন অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়নি। এমনকি কোন প্রকারের হয়রানি কিংবা ভোগান্তিও পোহাতে হয়নি। প্রশাসনের কঠোর তৎপরতার কারণে এবারের ইদ যাত্রা স্বস্তির ছিলো।
হানিফ পরিবহনের নওগাঁ কাউন্টারের সহকারি ম্যানেজার রিমন হোসেন জানান, এবার ইদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ার কারণে এবং বাস কোম্পানিগুলো যাত্রী পরিবহনে তাদের নতুন বাস সংযোগ না করার কারণে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত বাসের টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে অনেক সময় তাৎক্ষণিক ভাবে কাউন্টারে টিকেট প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। নওগাঁ থেকে ঢাকার সরকারের নির্ধারিত বাস ভাড়া হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা।
এই ইদে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি কেউ নিচ্ছে না। এছাড়া কাউন্টারগুলোতে প্রতিদিনই প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে। কিছু টাকা বেশি নিয়ে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর রোষানলে কেউ পড়তে চাচ্ছে না বলে এবার যাত্রীরা অতিরিক্ত টাকা, হয়রানি ও ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজ নিজ কর্মস্থলে স্বস্তিতেই ফিরতে পারছেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনুল আবেদীন জানান, ইদের আগেই জেলা প্রশাসক স্যার দূরপাল্লার বাস সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে ভাড়া বিষয়ে একাধিকবার সভা করেছেন। সভায় জেলা সদর থেকে দূরবর্তি উপজেলার দূরত্ব অনুসারে ঢাকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১শো থেকে ২শো টাকা বেশি নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে এবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার বাসের ভাড়া নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কিছুটা কম নেওয়া হচ্ছে।
যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে ও কোন প্রকারের হয়রানি-ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তি নিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে পারেন সেই লক্ষ্যে জেলা সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাস কাউন্টারে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। কোন কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, হয়রানি কিংবা যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করার কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মোদ্দাকথা হচ্ছে এই যে, ইদ শেষে নওগাঁ থেকে স্বস্তি নিয়ে যাত্রীদের বাসে করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরাতে জেলা প্রশাসন বদ্ধ পরিকর।