নিজস্ব প্রতিবেদক
বরেন্দ্রজুড়ে চলছে খরিপ-২ মৌসুমের রোপা আমন বীজতলা, লাগানো ও পরিচর্যার কর্মযজ্ঞ। এসময়েই বরেন্দ্রজুড়ে চলছে লোডশেডিং। সঙ্গে তীব্র রোদ ও ভ্যাপসা গরম। এতে জনজীবন যেমন অতিষ্ঠ তেমনি কৃষিতেও পড়ছিলো নেতিবাচক প্রভাব। ভ্যাপসা গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের অসুস্থতার হারও বেড়ে গিয়েছে। অস্বস্তি ও দুর্ভোগে স্বস্তি আনলো বৃষ্টি বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৭২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো দুপুর ৩ টায় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও জানাচ্ছেন আবহওয়া দপ্তর।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জৈষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. আব্দুস সালাম বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। সে সঙ্গে ভ্যাপসা যে গরমটা ছিলো, সেটাও কেটে গেছে। বিরতি দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, স্বস্তির এ বৃষ্টিতে ভিজছে বরেন্দ্র অঞ্চল। কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের ফলে রাজশাহী নগরীর উপশহর, উপশহর নিউমার্কেট, সপুরা, সাহেববাজার, বর্ণালীসহ নগরীর নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখে দেয়। এতে সাময়িক দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। তবে স্বস্তির বৃষ্টি সবচেয়ে ভালো প্রভাব ফেলেছে জনস্বাস্থ্য ও কৃষিতে।
বরেন্দ্রজুড়ে চলছে ধান, কপিসহ অন্যান্য অর্থকরি ফসলের চাষ। বিশেষত ধানের খেতে সেচ দেয়া নিয়ে কৃষকরা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছিলেন। লোডশেডিং তীব্র হওয়ায় আবাদ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছিলেন। সেখানে আশীর্বাদ হয়েই ঝরলো শুক্রবারের বৃষ্টি।
কৃষকরা বলছেন, যখন সেচ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সে মুহূর্তেই আকাশের বৃষ্টি হলো। একবারের সেচ খরচ বাঁচলো। এছাড়া তীব্র গরমে যারা কপি চাষ করছেন, তারা কিছুটা বিপাকে পড়েছিলেন পরিচর্যায়। তীব্র রোদে পাতা নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিলো। এ বৃষ্টি অন্য সব ফসলের জন্যই উপকারী বলছেন চাষীসহ কৃষি বিভাগ।
পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের হাজরাপুকুর এলাকার বাসিন্দা রাজু আহম্মেদ বৃষ্টির পর খেতে নেমেছেন ধানের বীজতলা ফেলার জন্য। তিনি বলেন, এই বৃষ্টির জন্য অনেক দিন অপেক্ষায় ছিলাম। দুই থেকে তিন দিন বৃষ্টি হলে ধানের বীজতলা ফেলবো এমন আশা ছিল। অবশেষে ধানের বীজতলা তৈরি করতে যে পানির প্রয়োজন হয় একদিনেই হয়ে গেছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে ছালমা বলেন, এই বৃষ্টি ফসলের জন্য ভালো হলো। বিশেষ করে রোপা আমনের জন্য খুবই ভালো। এছাড়া বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন শাক সবজি’র উৎপাদনও ভালো হবে।