শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
বামপন্থি ফার্ক বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংস্কার করা নতুন একটি শান্তি চুক্তিতে সই করতে যাচ্ছে কলম্বিয়া সরকার।
আগের চুক্তিটি গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার মাসখানেকের মধ্যে ওই চুক্তিটি সংস্কার করে নতুন রূপ দিয়েছে দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে সংস্কার করা নতুন চুক্তিটি বৃহস্পতিবার সই করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস। এবারের চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য গণভোটের পরিবর্তে কংগ্রেসে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, খবর বিবিসির।
৫২ বছর ধরে চলা কলম্বিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসান এই চুক্তির লক্ষ্য। ওই গৃহযুদ্ধে দুই লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
ভাষণে সান্তোস বলেন, “অর্ধশতাব্দি ধরে প্রিয়জনকে হারানোর ও লাখ লাখ কলম্বিয়ানকে দুর্ভগে ফেলা আমাদের ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়ের সমাপ্তি টানার সুবর্ণ সুযোগ আমাদের আছে।
“নতুন এই চুক্তিটি সম্ভবত সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না, কিন্তু শান্তিচুক্তিগুলো এমনই হয়। সব সময় এগুলোর সমালোচনা শুনতে পাওয়া যায়; এর কারণগুলো বোধগম্য এবং সেগুলোর প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।”
কিউবার রাজধানী হাভানায় চার বছর ধরে আলোচনার পর দুই মাস আগে বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতিতে এক আবেগঘন পরিবেশে মূল চুক্তিটি সই করা হয়েছিল। কিন্তু ২ অক্টোবরের গণভোটে কলম্বিয়ার মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করে।
ওই সময় বিরোধীদলীয় নেতা কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালভারো উরিব বলেছিলেন, চুক্তিটিতে বিদ্রোহীদের খুব বেশি ছাড় দেয়া হয়েছে। এরপর রক্ষণশীল কলম্বিয়ানদের কাছে চুক্তিটিকে আরো গ্রহণযোগ্য করতে ফার্ক ও সরকারের মধ্যস্থতাকারীরা এতে ৫০টিরও বেশি পরিবর্তন করেছে।
কিন্তু কলম্বিয়ার বিরোধী দলগুলো বলছে, এবারের চুক্তিটিতেও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিদ্রোহীদের শাস্তি দেয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। চুক্তি নিয়ে আরেকটি গণভোটে না যাওয়ায় দেশটির ডানপন্থি মহলের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন; কিন্তু প্রেসিডেন্ট সান্তোসের আশা, জাতির শান্তির আকাঙ্ক্ষা এসব প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে যাবে।
কলম্বিয়া সরকার ও ফার্ক বিদ্রোহীদের মধ্যে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু দেশব্যাপী সহিংসতা আবার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ, আর তা হলে আরেক প্রজন্মের সামনে থেকেও শান্তির সম্ভাবনা হারিয়ে যাবে।- বিডিনিউজ