ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি

আপডেট: মে ২৪, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

দুই জাতি, দুই রাষ্ট্রের মধ্যেই সমাধান


অবশেষে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন। দেশগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেয়া হবে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতেই তাদের এই উদ্যোগ। তবে দেশ তিনটির এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। আগামী ২৮ মের মধ্যে এই স্বীকৃতি আসতে পারে।

বিশ্ববাস্তবতার নিরিখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই এটি। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন সত্তা ছাড়া যে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীল পরিস্থিতি অধরাই থেকে যাবে, সে ব্যাপারে বিশ্বের দেশসমূহ সম্যক উপলব্ধি করতে পারছে। হোক না ইসরাইলসহ আমেরিকা ও তাদের কতিপয় মিত্র দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করছে।

২০২৩ এর ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর সম্প্রতি ইউরোপজুড়ে গাজাবাসী তথা ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন বাড়তে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দেলন ফিলিস্তিনিদের পক্ষে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রতিবাদের এই ভাষা এটা পরিষ্কার করেছে যে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে মেনে নেয়া সময়েরই দাবি।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের ১৪৩টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ বছরের এপ্রিলেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়ার প্রস্তাব তোলা হয়। সেখানে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১৪৩টি দেশই এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।

ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য পদের জন্য প্রচারণা চালানোর পরে জাতিসংঘে যোগদানে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও, ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর পূর্ণ সদস্যপদ দেয়া হয়। যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটিকে অর্থ সহায়তা দেয়া বন্ধ করে দেয়। বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা নাখোস হলেও পরিস্থিতি যে পাল্টাচ্ছে সেটা বেশ পরিষ্কার। অর্থাৎ যুদ্ধ-বিগ্রহের মধ্য দিয়ে একটি জাতিসত্তা বছরের পর বছর চলতে পারে না। এটা শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিপন্থি।

মানবতার পরিপন্থি কাজ। বাস্তবতা বিবর্জিত একটি যুদ্ধ কৌশলকে টেনে নেয়ার অর্থই হলো- বিশ্বকে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই বহাল রাখা; যার ফলভোগ করতে হয় বিশ্বের দেশসমূহকে, শান্তিপ্রিয় মানুষকে।

মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি স্বীকৃতি দান ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছে। দ্বি-জাতি সত্তা ও পৃথক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং শান্তির জন্য অঙ্গীকারই দীর্ঘ দিনের সমস্যার সমাধান করতে পারে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন জাতিসত্তাকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে যে কোনো উভয় জাতিসত্তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনছে না উভয় পক্ষকেই সম্যক অনুধাবন করতে হবে।

দুই জাতি দুই রাষ্ট্রের মধ্যেই সমাধান আছে। সংখ্যাাধিক্য দেশ সেই বিষয়েই ঐকমত্য পোষণ করছে, এটাই একুশ শতকের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ