শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগসাজশের আরও একটি অকাট্য প্রমাণ মেলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার কিছু সময় পরে ওয়াশিংটন সময় সকাল ৮টায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের কজন কর্মকর্তা নিয়ে দ্রুত বৈঠকে মিলিত হয়। নিকট প্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আথারটন সভায় বাংলাদেশের ঘটনাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘এটা হচ্ছে সুপরিকল্পিত ও নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করা অভ্যুত্থান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেন, ‘আমি ব্যুরো অব ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিসার্চ (আইএনআর) থেকে আরও ভালো খবর পেয়েছি। তিনি ওই কর্মকর্তার সঙ্গে ওয়াশিংটনে আগেই কথা বলেছিলেন।
কিসিঞ্জারের ভালো খবর হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর। তাছাড়া স্ট্যানলি উলপার্ট তার গ্রন্থে মুজিব হত্যা-ষড়যন্ত্রে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর জড়িত থাকার দলিলপত্রও হাজির করেছেন। ১৯৭৫ এর জুনে কাকুলের পাকিস্তান সামরিক একাডেমিতে ভুট্টো বলেন, ‘এ অঞ্চলে শিগগিরই কিছু পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।’ স্ট্যানলি উলপার্ট আরও লিখেছেন, দু’বছর যাবৎ ভুট্টো বাংলাদেশের কয়েকটি মুজিববিরোধী দলকে তার গোপন ‘ স্বেচ্ছাধীন তহবিল’ থেকে অর্থ সাহায্য অব্যাহত রাখেন এবং আগস্ট (১৯৭৫) শেষ হওয়ার আগেই তিনি তার বিনিয়োগের ফল লাভ করেন। এ হত্যাকাণ্ডটি মূলত ছিলো, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের একটি ধারাবাহিকতার সাফল্য।
তাছাড়া মার্কিন সাংবাদিক লিফশুলজ তার গ্রন্থে বহু দলিলপত্রভিত্তিক তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছেন যে, লেডিস ক্লাবের তুচ্ছ ঘটনার জের হিসেবে শেখ মুজিব নিহত হননি। তিনি প্রমাণ করেছেন, বহু আগেই মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুজিব হত্যাকারীরা যোগাযোগ স্থাপন করে। ওই গ্রন্থে তিনি তুলে ধরেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজনদের ভেতরে মাহবুবুল আলম চাষী, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, এবিএস সফদার ছিলেন তখন মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর মুখ্য এজেন্ট। সফদার যুক্তরাষ্ট্রে সিআইএর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। খন্দকার মোশতাককে বিভিন্ন সময়ে তারা প্রলুব্ধ করেছেন।
তথ্যসূত্র: মর্তুজা হাসান সৈকতের ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্র ও জিয়ার সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে সংকলিত