বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ চর্চায় নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: আগস্ট ৮, ২০১৭, ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবনাদর্শ চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। আজ ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমি আশা করি, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে জানতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন,বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই’। মহীয়সী এই নারী ছিলেন বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর। জাতির পিতার সহধর্মিণী হিসেবে তিনি আমৃত্যৃ স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন সহজ-সরল নিরহঙ্কার একজন মানুষ। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ জীবন-যাপনে তিনি অভ্যস্ত ছিলেন। সাধারন বাঙালি নারীর মতো স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনেও তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সাফল্যেও বঙ্গমাতা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। জাতির পিতা রাজনৈতিক কারণে প্রায়শঃ কারাগারে বন্দি থাকতেন। এই সময়ে তিনি (বেগম মুজিব) হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে একদিকে স্বামীর কারামুক্তি অন্যদিকে আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এর পাশাপাশি সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতেও তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বাণীতে উল্লেখ করেন, শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব ৬-দফা ও ১১-দফার আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ ও জাতির জন্য তাঁর অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাঁকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সঙ্গে তিনিও সপরিবারে ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন, যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। বঙ্গমাতা যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।-বাসস