বজ্রপাতে মৃত্যু বজ্রপাতনিরোধক ব্যবস্থা কী!

আপডেট: মে ২৮, ২০২৩, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে মানুষ ও গবাদি পশুর মৃত্যু-ঘটনা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হিসেবো দেখা দিয়েছে। বজ্রপাতে মৃত্যু-ঘটনার কারণ বিশেষজ্ঞগণ নানাভাবে ব্যাখ্যা করছেন। কিন্তু এর আসন্ন সমাধান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যাচ্ছে না। বজ্রপাত প্রতিরোধে বিপুল পরিমাণ তালগাছ লাগানোর কর্মসূচি ব্যাপকতা লাভ করে। তবে এটা যদি কিঞ্চিৎ সমাধান হয়Ñতাতেও সমাধান পেতে ৪০/৫০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। কেননা একটি তাল গাছ আকাশে উঁকি দিতেই ওই পরিমাণ সময়ের প্রয়োজন হয়। তালগাছ খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। তবে ইদানিং বজ্রপাতের মারণ-কবল থেকে রক্ষার জন্য সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ দেয়া হচ্ছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালই মূলত বহুল বজ্রপাত হয়ে থাকে। এ সময়ের মধ্যেই প্রাণহানির সংখ্যা বর্তমানে আশংকাজনক। এ ক্ষেত্রে ব্যাপক সচেতনতা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হতে পারে। বজ্রপাতের সময়, প্রকৃতি-বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করে মাঠ-নদী- প্রান্তরে কাজের অভ্যেস গড়ে তোলা যেতে পারে।
সংবাদ মাধ্যমে তথ্যমতে, বব্জ্রপাতে প্রতিবছর গড়ে ২৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যায় বলে সরকারি হিসাবে দেখানো হচ্ছে। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বেশি। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ুর পরিবর্তন আর অসচেনতার কারণে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে অভিমত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষজ্ঞদের।
বিশেষজ্ঞ অভিমত হলো- বাংলাদেশের অবস্থানের কারণেই বজ্রপাত বেশি হয়। দক্ষিণে বঙ্গপোসাগর, উত্তরে হিমালয় থাকায় গরম-আর্দ্র ও শীতল-শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। এই দুই ধরনের আবহাওয়ার সংঘাত ঘটলেই বজ্রপাত হয় সাধারণত। মার্চ থেকে শুরু হয় বজ্রপাতের অনুকূল পরিবেশ। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ রোধে মানুষের কোনো হাত নেই। কিন্তু বজ্রপাতনিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তোলা মানুষের পক্ষে সম্ভব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ডিজাস্টার ফোরামের তথ্যমতে, এদেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ি ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। তবে শহরের ভবনগুলোতে বজ্রপাত প্রতিরোধক দ- থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম।
সাধারণত লক্ষ্য করা যায়, বিকেলের অগ্রভাগেই বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা অধিক লক্ষ্য করা যায়। মেঘের গতি-প্রকতি পর্যবেক্ষণ করে বিস্তৃত ফাঁকা এলাকায় কাজে নিযুক্ত হওয়া যায়। বজ্রপাতনিরোধক ব্যবস্থায় আবহাওয়ার গতি–প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা যেতে পারে। তাৎক্ষণিক উপায় হিসেবে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া সমীচীন হবে।