লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
নিঃসন্তান-বন্ধ্যা নারীরা সদ্য স্নান শেষে ভেজা কাপড়ে বটগাছের নিচে বসে আঁচল পেতে সন্তান লাভের জন্য ভিক্ষা চাইছেন। এ সময় যদি গাছের ফল বা পাতা তাদের আঁচলের ওপর পড়ে তাহলে নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করবেন। এমনই বিশ্বাস নিয়ে অনেক বন্ধ্যা নারী ভিড় জমিয়েছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের গোঁসাইজীর আশ্রমে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দিনব্যাপী উপজেলার গোঁসাইজীর আশ্রমে শুরু হওয়া নবান্ন উৎসবে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বটগাছের নিচে ৮ জন নারী ভক্ত রঙিন শাড়ির আঁচল পেতে গাছ থেকে পাতা বা ফল পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখ ভাল করছেন। আর তাদের কর্মকান্ড দেখতে ভীড় জমিয়েছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ। প্রতি বছরই দেশের আনাচে কানাচে থেকে নিঃসন্তান নারী নবান্ন উৎসবে এসে সন্তান লাভের আশায় ভীড় করেন এই বটগাছ তলায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, অনেকের মুখে শুনেছি আঁচল বিছিয়ে মানত করলে সন্তান হয় বা হয়েছে । সে আশায় এখানে এসেছি। খুলনা থেকে আসা আরেক নারী জানান, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে আমার সন্তান হয় না। অনেক চিকিৎসা করিয়ে কোনো ফল না পেয়ে শেষে এখানে এসেছি।
আশ্রম কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার জানান, দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসবে নিঃসন্তান নারীরা তাদের মানত করে। পরে আগত ভক্তদের কলাপাতায় করে প্রসাদস্বরূপ খিচুড়ি খাওয়ানো হয়।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম শাহাবুদ্দিন জানান, এভাবে সন্তান লাভ করা অসম্ভব। এমন প্রার্থনা হচ্ছে কুসংস্কার। বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এর কোনো ভিত্তি নেই। নারী-পুরুষের মিলন ছাড়া কারও ফুঁ, মন্ত্র, গাছের পাতা ও ফল- এগুলোর দ্বারা সন্তান উৎপাদন সম্ভব নয়। এজন্য ফকির, সাধু, দরবেশদের পিছে না ঘুরে তাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।