বদলগাছীতে ঘাস চাষে ভাগ্য বদল ইউনুস বয়াতীর

আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২৪, ৮:০৭ অপরাহ্ণ


এমদাদুল হক দুলু বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:নওগাঁর বদলগাছীসহ জেলার সব এলাকাতেই উন্নত প্রজাতির ঘাস চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা গরু-ছাগল লালন পালন করেন, এদের মধ্যে অনেক কৃষকই ৫/১০ কাঠা জমিতে ঘাস চাষ করেছেন। আবার অনেক কৃষক নিজের চাহিদা মিটিয়ে ঘাস স্থানীয় হাটে-বাজারে বিক্রি করেন। এক আঁটি ঘাস বিক্রি হয় ৩০/৪০ টাকায়।

শুধু ঘাস চাষ করে নিজের ভাগ্য বদল করেছে একজন সফল চাষী উপজেলার মিঠাপুর এলাকার ইউনুছ বয়াতী। সম্প্রতি পেশাগত কাজে গিয়ে মিঠাপুর এলাকায় দেখতে পেয়ে এ প্রতিবেদককে ইউনুছ বয়াতী বলেন, আমি তো কৃষি কাজে অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখি। আমাকে নিয়ে কিছু লেখেন না কেন। সে নিজে ভ্যান চালিয়ে আমার সামনে আসে, তখনো ভ্যানে কয়েক আঁটি ঘাস ছিল। তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম লম্বা ও লিকলিকে বডি, মাথায় লম্বা চুল। জানতে চাইলাম, কী করেন আপনি? উত্তরে বললেন আমি একজন বয়াতী, গান করি এবং একজন সফল ঘাস চাষি। বিক্রি করি হোম ডেলিভারি দিয়ে।

দেখতে গেলাম তাঁর ঘাস খেত। মিঠাপুর পুরাতন বাজারের ইটভাটার পাশেই তাঁর ঘাস খেত। উঁচু নিচু জমি মিলে সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে তিনি ঘাস চাষ করেছেন। শীত ও গীস্ম কালীন চাষের ভিন্ন ভিন্ন জাত রয়েছে। এর মধ্যে জারা-১, নেপিয়ার ঘাস, পাংচুন ঘাসসহ নানা প্রজাতির ঘাস সে চাষ করেছে। এর মধ্যে বিবি ওয়ান জাত ঘাস গরমে ফলন ভালো হয়। পাংচুন ও নেপিয়ার হয় শীতে। তথ্য সংগ্রহকালে সেখনে উপস্থিত কৃষক হাফিজার জানায় বয়াতী একজন সফল ঘাস চাষী। সে ঘাস চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছেন। ঘাস ছাড়া সে অন্য কোনো ফসল করে না। আমার জমিটাও তাঁর কাছে লিজ দেয়া ছিল, খুলে নিয়েছি।

উজালপুর গ্রামের সুইট জানায়, তাঁর চারটি গাভী। প্রতিদিন ঘাস লাগে ২০ আঁটি। বেশি করে নিই জন্যই দাম দেয় ২০ টাকা আঁটি। সপ্তাহে অথবা মাসে মূল্য পরিশোধ করি। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ায় আমরা উপকৃত হই।
ঘাস চাষী ইউনুছ বয়াতী খাদাইল ব্রামন পুখুরিয়া গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে। বয়াতী বলেন, আমার নিজের জমি সোয়া বিঘা, ৫ বিঘার কিছু বেশি জমি লিজ নিয়ে মোট সাড়ে ৬ বিঘা জমি ঘাস চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় ঘাস চাষে বেশি লাভ। বছরে দিনবার ফসল ফেলানো হয় আর একই জমি থেকে বছরে ৬ বার ঘাস কাটা হয়। এক বিঘা জমিতে একবার ঘাস কাটলে ৪০/৪২ হাজার টাকার ঘাস বিক্রি হয়। আমি জমি লিজ নিয়েছি বছরে ২০/২২ হাজা টাকা বিঘা দরে।

বয়াতী আরো জানান, আশেপাশে বিভিন্ন গ্রামে ৬০/৭০টি পরিবার রয়েছে। তাদের বাড়ি বাড়ি ঘাস পৌঁছে দিতে হয়। এক আঁটি ঘাস ৩০/৪০ টাকা বিক্রি হয় তবে কেউ বেশি পরিমাণে কিনলে তখন কিছুটা দাম কমে দিই। এ ছাড়া হাটে বাজারেও বিক্রি করা হয়। ঘাস চাষে আমি বেশি লাভবান তাই অন্য কোন ফসল করি না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক বলেন, গো-ছাগলের উন্নত খাবার ঘাস। ঘাসে ভিটামিন হরমন বেশি। ঘাস খাওয়ালে গাভী সময় মত বাচ্চা ও পরিমাণ মত দুধ দিবে। তাই সব সময় খামারিদের ফাঁকা জায়গা জমিতে ঘাস চাষে পরামর্শ দিচ্ছি। আমি ইউনুছ বয়াতীর ঘাস খেত দেখতে যাবো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ