বদলগাছীতে টাকা চেয়ে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে, অডিও রেকর্ডিং ভাইরাল

আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২৪, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:


নওগাঁর বদলগাছীতে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলমের নিকট মোবাইলফোনে টাকা চেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সৌখিন নামে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। টাকা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ডিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে হয়েছে। চাঁদা দাবি করা বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন সৌখিন বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক বলে জানা যায়।

অডিও রেকর্ডিঙে শোনা যাচ্ছে সৌখিন সামসুল আলমকে বলছে, আপনি মানক্যাকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন, মানক্যা কী আপনাকে বাঁচাতে পারবে। সামসুল বললেন, বাঁচা মরা আল্লার হাতে ভাই। তখন সৌখিন বলেন, আল্লার হাতে ছিল আল্লা এখন আমার হাতে লিখে রেখেছে আপনার তার কী হবে। সামসূল আলম বলেন, এ সব গুজব ভাই, মিথ্যে কথা। আমার কি আর টাকা আছে। সৌখিন বলেন, গুজব উঠে কেন ভাই। এক পর্যায় সৌখিন জানতে চায় আপনি আছেন কোথায়।

এ প্রসঙ্গে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ প্রতিবেদককে ফোন করে বলেন, গত ৪ নভেম্বর গোবরচাপা হাটে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ঘটনার মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলার বাদী সৌখিন। সৌখিন আমাকে একদিন ফোন করে এক লাখ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে পারিনি তাই হয়তো আমাকে আসামী করেছে। তখন আর কী করার আছে, অনেক ঘেটে ঘুটে মোবইল ফোন থেকে তার টাকা চাওয়ার কল রেকর্ডটি বের করলাম।

এ বিষয়ে সৌখিন জানান, আমি তাকে ফোন করেছিলাম অনেক আগে, তবে আমার কল রেকর্ডটি ইডিটিং করে ছাড়া হয়েছে। আমি তাকে ওভাবে কথা বলিনি।

বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপু মুঠোফোনে বলেন, ওই কল রেকর্ডের ঘটনা এখনকার না, এটা মামলার অনেক আগের। বিষয়টি গতকাল আমি জেনেছি। তবে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে যে এধরনের কাজ করবে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন বিষয়টি জানার পর তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে বহিস্কার করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাদের কথোপকথনটিতে শোনা যায় পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

সৌখিন: হ্যালো, ভাই আমি চ্যাংলার সৌখিন। সামছুল আলম: হ্যা ভাই, ভালো ভাই? সৌখিন: চিনতে পারছেন।
সামছুল আলম: হ্যা ভাই চিনতে পারছি “ক” সৌখিন: আপনি ওই ম্যানক্যাক (মানিককে) বলে ওই ইয়ে দিছেন। দু লাখ টাকা বলে দিছেন ম্যানক্যাক। সামছুল আলম: কোনো ট্যাকা পয়সা আছে ভাই? এলা গুজব কুটি থ্যাকা শুনলি !ক”

সৌখিন: আমি শুনলাম ম্যানক্যাক আপনে দুলাখ টাকা দিয়েছেন। সামছুল আলম: না না না ভাই।
সৌখিন: তে ম্যানক্যা আপনাক বাঁচাতে পারবে? সামছুল আলম: বাঁচা মরা এখন আল্লাহ্’র হাতে ভাই। সৌখিন: আল্লাহ্’র হাতে ঠিক আছে, কিন্তু আল্লাহ্ যে আমার হাতে লিখে রেখেছে আপনার, এটার কি হবে। সামছুল আলম: তাই না? সৌখিন: হ্যা, তে আপনি ম্যানক্যার সাথে যোগাযোগ করবেন, আর আমি বাল ফ্যালাবো? ভাগ মিলতেছে না। সামছুল আলম: না ভাই, না না না। সৌখিন: আপনি আমার এই নং এ বিকাশ, নগদ সব আছে। আপনি এক লাখ তাহলে এখানে পাঠায়ে দেন। সামছুল আলম: হাহাহা করে হাসছিল। সৌখিন: তাহলে আপনে মনে করেন ম্যানক্যাক টাকা দিবেন মানে? ম্যানক্যা দলের কে? ওই সাওয়ার ব্যাটা দলের কে?

সামছুল আলম: না ভাই না, এগুলো মিথ্যে কথা ভাই। সৌখিন: তাহলে এলা গুজ উঠে কেন? আপনে তাহলে ম্যানক্যাকে ফোন করেন। পাশে থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায় সে কোন জায়গায় আছে খোঁজ নাও, সঙ্গে সঙ্গে তার সুরে জানতে চান আপনি কোথায় আছেন বলেন তো।