রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছী কোলার হাটে ছাগল বেচাকেনা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জের ধরে হাট অফিসে সালিশে অভিযুক্তকে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই থাপ্পর মারাই ছাগল বেপারী ও হাট ইজারাদারদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিরপরাধীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার অভিযোগ উঠেছে এলাকায়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ছাগল বেপারিদের বিরুদ্ধে হাট অফিসে হামলা, ভাংচুর ও টোল আদায়ের টাকা লুটপাটের অভিযোগ এনে হাট ইজারাদার ফেরদৌস হোসেন বাদী হয়ে গত ৭ জুলাই ১৪ জনকে আসামী করে বদলগাছী থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
কোলাহাটের ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন বলেন, ৫ জুলাই শুক্রবার কোলার হাটে অচেনা এক ব্যক্তি ২জন লোক সাথে নিয়ে ছাগল বিক্রি করতে আসে হাটে। ছাগল বেপারিরা বিক্রেতার সঙ্গে থাকা ওই দুজন লোকের সাথে ছাগলের দামদর করছিল। বেপারিরা ১৫ হাজার টাকা দাম করে ঝুলাঝুলি করছিল। এ সময় ছাগল মালিকের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা মূল্যে পার্শ্ববর্তী আক্কেলপুর উপজেলার গনিপুর গ্রামের গোলাপ নামে এক ব্যক্তি ছাগলটি কিনে নিলে বেপারিরা ছাগল বিক্রেতার সঙ্গে তর্কবিতর্ক করছিল।
বেপারিদের দাবী আমরা দামদর করছি, দামদর শেষ না হতেই অন্যজনকে ছাগল কেন দিলেন। এর মধ্যে ছাগল ক্রেতা গোলাম বেপারিদের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। দুপক্ষই উত্তেজিত, এক পর্যায় বেপারিরা ছাগল ক্রেতা গোলাপকে ধাক্কাধাক্কি ও চরথাপ্পড় মারে। উপস্থিত লোকন ঝগড়া ভেঙ্গে দেয়। বিষয়টি নিয়ে ওই দিন সন্ধায় হাট অফিসে সমাধানের লক্ষে সালিশ বসে। সালিশ শুরুতেই কোন কথা না বলে ছাগল বেপারী হারুনকে চরথাপ্পর মারে ইজারাদার ফেরদৌসের সহযোগি রফিকুল ইসলাম। সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় ছাগল বেপারীরা লাঠি শোডা নিয়ে অফিস ঘরের দড়জা ভাংচুরের চেষ্টা করে।
সেখানে উপস্থিত লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এক পর্যায় ছাগল বেপারীরা হটে যায়। এ ঘটনায় হাটের ইজারাদার ফেরদৌস হোসেন বাদী হয়ে হাট অফিসে হামলা ভাংচুর ও টোল আদায়ের টাকা লুটপাট করার অভিযোগ তুলে হাটের অরিরিক্ত টোল আদায় প্রতিবাদকারী আলমগীর আল ফারুক শাহিনকে ১ নং ও সাবেক বনিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসকে ২ নং আসামী করে।
এছাড়া ছাগল বপোরী আজাহার, রিংকু, হারুন, সিজারসহ ১৪ জনকে আসামী করে হাট ইজারাদার ফেরদৌস সরদার বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। নিরপরাধ দুজনকে ১ নং এবং ২ নং আসামী করায়এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠে। কোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি রুনজুসহ স্থানীয় দোকানদার আজান আলী, রুবেল হোসেন জানায় ঘটনার দিন ২ নং আসামী বনিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস কোলা বাজারে ছিল না। তাকে হয়রানী মুলক আসামী করায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বাজারের লোকজন জানায় ১ নং আসামী অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করেছিল তাই তাকে আসামী করেছে। ঐদিন ঘটনার পরে ১ নং আসামী বাজারে এসেছে। সে ঘটনার সাথে জড়িত নয়। মুল ঘটনা ছাগল বেপারী ও ছাগল ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে বিরোধ। পরে সালিশে ইজারাদারের লোক রফিকুল ছাগল বেপারীকে থাপ্পর মারায় শুরু হয় ইজাদারের লোকজনদের সঙ্গে টেলা ঠেলি এবং দড়জা ভাংচুরের ঘটনা।
যা ভিডিও ফুটেজে প্রমান রয়েছে। হাট ইজারাদার ফেরদৌস জানায় ১নং ২ নং আসামী ঘটনার সময় ছিল। তাই তাদের আসামী করা হয়েছে। ২ নং আসামী সাবেক সভাপতি কুদ্দুস জানায় আমার অসুস্থ্য ভাতিজাকে নিয়ে নওগাঁ ডাক্তারের কাছে ছিলাম। ঘটনার দিন বাজারে ঢুকতেই পারিনি।
বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ মো, মাহবুবুর রহমান বলেন বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।