রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফল খারাপ এবং শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় ১ হাজার ১৩৫টি কলেজকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের পাঠদান অনুমোদন বাতিলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশকিছু আছে যারা সরকারের কাছ থেকে এমপিও (বেতনবাবদ সরকারি অনুদান পাওয়া) হিসেবে বেতন-ভাতা নেয়। এদের কারণে সরকারের বিনিয়োগ সম্পূর্ণ গচ্চা যাচ্ছে। সরকারকে এবিষয়ে কলেজ এমপিও ভুক্তির আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা উচিত ছিল। কারণ অনেক এলাকায় কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাবে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ প্রদান করে অর্থ আদায় করে থাকে। শুধু তাই নয়, কলেজকে এমপিও ভুক্তির করার জন্য যেসব সরকারি কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। তারাও অর্থের কাছে নত হয়ে ভুয়া শিক্ষার্থীর তালিকা ও অবকাঠানো দেখে এমপিও ভুক্তির জন্য সুপারিশ করে। তাই এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে কলেজগুলো প্রতিষ্ঠা শুরু থেকে সঠিকভাবে দেখভাল করতে হবে। প্রয়োজনে কলেজ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন প্রথমেই বাতিল করতে হবে।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলার ৮৭৮টি কলেজ অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯৭টিতে সর্বনিম্ন পাঁচজন থেকে সর্বোচ্চ ২০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আর ১৮১টি প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বনিম্ন পাঁচজন থেকে সর্বোচ্চ ২০ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এছাড়া ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার ১৮৫টি কলেজে এবার কোনো ছাত্রছাত্রী ভর্তির আবেদন করেনি। বাকি ৭২টি থেকে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করবে না আবার শিক্ষার্থী ভর্তি হবে না সেসব প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের সমস্যার কারণে সরকারের নির্দেশে আমরা সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছি। এ বছরের তথ্য কয়েকদিন আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতো আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। মন্ত্রণালকে এবিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে করে অসাধু উদ্দেশ্যে নিয়ে যারা কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা চিন্তা করবে। তারা যেন সরকারের কঠোর পদক্ষেপের জন্য আগামীতে যেনতেনভাবে কলেজ প্রতিষ্ঠার সাহস না পায়। সেদিকে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে।
নির্বিচারে কলেজ-মাদরাসা খোলার অনুমতি দেয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান এভাবে ছাত্রশূন্য থাকছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এসব প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের পেছনে রাজনৈতিক বিবেচনাসহ মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ঘুষ-বাণিজ্য করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে। সুন্দর একটি দেশ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষার্থীদের আগামীতে সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।