বরেন্দ্র অঞ্চলে আমের ভাল দাম পেয়ে খুশি কৃষক

আপডেট: জুন ১০, ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ণ


ডিএম রাশেদ পোরশা (নওগাঁ) :


গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর আমের ভাল দাম পেয়ে খুশি বরেন্দ্র অঞ্চলের আম চাষীরা। এবছর বাজারে সব প্রকার আম তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আমের ফলন কম। তবে ভাল দাম পেয়ে ক্ষতিপুষিয়ে যাচ্ছে চাষীদের।

বরেন্দ্র অঞ্চলের বাতাসে বইছে এখন পাকা আমের মিষ্টি ঘ্রাণ। গাছে গাছে দেখা দিয়েছে বছরের শ্রেষ্ঠ ফল আম। এরই মধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে ফরমালিনমুক্ত গাছপাকা আম।

পাখিরা এখন গাছের ডালে বসে রসালো পাকা আম খাচ্ছে আর মনের সুখে গাইছে গান। আম চাষী, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমজুররা আমপাড়ায় ব্যস্ত। অনেকেই পরিবারের সকলে মিলে একসাথে বসে পাকা আম খাওয়ায় ব্যস্ত, আবার কেউ আত্মীয় স্বজনের বাসায় পাকা আম পাঠানোই ব্যস্ত।

পোরশা উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সারাইগাছী বাজার, পোরশা সদর বাজার, তেঁতুলিয়া বাজার, নোচনাহার বাজার, শিশা বাজার ও বড়গ্রাম বাজার এবং সাপাহার উপজেলা সদরের আমের আড়ৎ গুলোতে গাছ পাকা আম কেনা বেচা শুরু হয়েছে। আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে আম ভেঙ্গে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছেন। অনেক বাগান মালিকরা গাছেই আম ঠিকায় (কনটাকে) বিক্রি করছেন।

গাছে সব জাতের আম পাকা দেখা না গেলেও গত কয়েকদিনে গুটি জাতীয়, গোপালভোগ ও খিরসাপাত(হিমসাগর) আম পাকা দেখা দিয়েছে। এ জাতীয় আমগুলো গাছ থেকে নামাতে নামাতেই পাকা দেখা দিবে আমের রাজা বলে খ্যাত ল্যাংড়া, এর পর পর্যায়ক্রমে ফজলী, রূপালী ও আশ্বীনা।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর আমের ভাল দাম পেয়ে খুশি আম চাষীরা। এবছর গুটি জাতীয় আম ১মণ (৫২কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। গোপালভোগ একই ওজনে প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত। আর খিরসাপাত (হিমসাগর) প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত।

পোরশা উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারের আমের আড়ৎগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাপকভাবে আম বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এ উপজেলার বিভিন্ন আড়ৎ থেকে অর্ধ শতাধিক ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন শহর এবং এলাকায় আম রপ্তানি করা হচ্ছে।

পোরশা উপজেলার সহড়ন্দ গ্রামের আমচাষী হাবিবুর রহমান জানান, এবছর আম মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকলেও গাছে মুকুল আসার পরই কয়েকবার আকাশের বৃষ্টি হওয়ায় অনেক মুকুল ঝরে গিয়েছিল। এ কারণে এবছর আমের ফলন তুলনামূলক কম। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর বাজারে আমের দাম অনেক ভাল।

যে কারণে ফলন কম হলেও, দাম ভাল পেয়ে ক্ষতি পুষিয়ে যাবে বলে জানান তিনি। উপজেলার পাইকারি আম ব্যবসায়ী সজল মিয়া জানান, তাদের আড়তে প্রতিদিন গুটি, গোপালভোগ ও খিরসাপাত আম বেচা কেনা হচ্ছে। একদিকে এলাকায় আমের ফলন কম, অন্যদিকে মোকামে চাহিদা বেশি থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর আমের দাম অনেক বেশি।

পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনূর রশিদ জানান, নওগাঁ জেলার অন্যান্য উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ আম চাষ হয় পোরশা উপজেলায়। এবছর এ উপজেলায় ১০হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। পোরশা উপজেলার মাটি আম চাষ করার উপযোগী। মাটি ভাল হওয়ার কারনে এখানকার আম অনেক সুস্বাদু বলেও জানান তিনি।