মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নাটোরপ্রতিনিধি:
বর্ষা এলেই নাটোরের সিংড়ার আনন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো মাঠে জমে থাকে হাঁটু থেকে কোমর ও গলা পর্যন্ত পানি। ফলে পানি মাড়িয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। বর্ষা মৌসুমজুড়ে বন্ধ থাকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ও খেলাধুলা।
প্রতি বছরই বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে সাপ, পোকামাকড়ের আক্রমণ, হাত-পায়ে চুলকানি ও পাঁচড়া ঘা এবং পানিতে ডুবে দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর আভিভাবকরা। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে উপস্থিতি কমে যায়। আর প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমজুড়ে এ বিদ্যালয়ে এমনই দৃশ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে এলে মাঠ ভরাটের মিলে শুধু প্রতিশ্রুতি। তা ছাড়া বিদ্যালয় মাঠ উঁচু-নিচু থাকায় শুকনো মৌসুমজুড়েও চলে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ। খেলাধুলা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার শিকার হয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ বিদ্যালয় মাঠটি কি আদৌ পূরণ হবে?
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হাকিম বলেন, বিদ্যালয়ে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু মাঠ নিচু হওয়ায় বর্ষা মৌসুমজুড়ে সেখানে হাঁটু থেকে কোমর ও গলা পানি জমে থাকে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে যায়। আবার অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হলে প্রতি বছরই মাঠ ভরাটের মিলে শুধু প্রতিশ্রুতি। কিন্তু শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে সব সময়ই তাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লাবনী খাতুন বলেন, শিশুদের খেলতে খেলতে শেখার বয়স হলেও বছরের প্রায় অর্ধেক সময় মাঠে পানি থাকায় খেলাধুলা ও সমাবেশ বন্ধ থাকে।
শিক্ষার্থী উম্মে সাবিহা, রুকাইয়া খাতুন, আবির মারুফ, মৌমিতাসহ অনন্ত ১৫ শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে তাদের দুর্ভোগে কথা জানা যায়। প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিদ্যালয় মাঠ নিচু হওয়ায় বর্ষা মৌসুমজুড়ে তাদের সমাবেশ ও বিনোদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকে। অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীদেরও সংখ্যা কমতে থাকে।
শিক্ষার্থী অভিভাবক আশরাফুল ইসলাম ও আখি খাতুন বলেন, এ এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষক ও দিনমজুর। তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বিদ্যালয়ে এসে সঙ্গ দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়েও পানিতে পড়ার আতঙ্কে থাকতে হয়। যেখানে বিদ্যালয়ই নিরাপদ নয়, সেখানে শিক্ষার্থীদের কীভাবে পাঠাই।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৭৪ সালে স্থাপিত হয়। বরাবরই এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ও ফল অনেক ভালো। খেলাধুলার বড় মাঠ থাকলেও সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিক্ষার্ক্ষীরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী আশরাফ বলেন, দ্রুতই মাঠ সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা খাতুন বলেন, বিষয়টি তার নজরে নেই। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থার আশ্বাস দেন।