রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
বাংলাদেশে প্রত্যাবশিত রোহিঙ্গারা সত্যিই স্বদেশে ফিরতে পারবেন? তেমনি পরিস্থিতি-পরিবেশ ধরে উদ্যোগ এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও এটি পাইলট প্রকল্প। পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক হলে রোহিঙ্গা প্রতাবর্তনের সমস্যা ও সঙ্কটের সমাধান প্রত্যাশা করা যায়।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্ষার আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন পাইলট প্রকল্প শুরু করার জন্য দ্রুত কাজ করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে প্রত্যাবসনের জন্য এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিকের তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে। সেটির যাচাই-বাছাই দ্রুততার সঙ্গে করছে মিয়ানমার সরকার। পাশাপাশি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ ও সামরিক জান্তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য মিয়ানমার পাইলট প্রকল্প দ্রুত শুরু করতে চাইছে। বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং এ লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। রাখাইন পরিস্থিতি এখন আগের যেকোনো সময়ের থেকে ভালো। রাখাইনে মুসলিমদের জন্য নিরাপত্তা, জীবনযাপন ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। এ কারণে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাইছে দুই দেশ।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য মিয়ানমার বাংলাদেশ, ভারত, চিন ও আসিয়ানের আটটি দেশসহ মোট ১১টি দেশের রাষ্ট্রদূত বা কনসাল জেনারেলদের রাখাইনে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে পাঠায়। এরমধ্যে টেকনাফের উল্টো দিকে নাখুয়া রিসেপশন সেন্টার এবং এর পাশের একটি গ্রাম, সিতওয়েতে একটি ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট ক্যাম্প এবং চক্তো অঞ্চলে আরেকটি ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট ক্যাম্পসহ অন্যান্য জায়গা পরিদর্শন করে তারা।
এই উদ্যোগ যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন না হয় সে ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি মায়ানমারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করতে হবে। কেননা এর আগেও উদ্যোগের সূচনা হয়েছিল কিন্তু মিয়ামনারের অনীহা বা অসহযোগিতার কারণে সেটা বাস্তবায়ন করা যায় নি। অথচ রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ইস্যু উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মায়ানমার সামরিক জান্তার অনমনীয় মনোভাব যে, দেশটির ভাবমূর্তির জন্য সহায়ক হচ্ছে না। সেটা তারা চেষ্টাও করেছে কিন্তু বাস্তবতা হলো রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মত অপরাধ এত্টোুকুও কম করে দেখেনি বিশ্বের জাতিসমূহ। এমনকী মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও মিয়ামারের অপরাধ লঘু করে দেখছে না। অতএব সমস্যার সমাধানেই মিয়ারমারের ভাবমূতি নির্ভর করছে।
অন্যদিকে রোহিঙ্গারা ভয়ানকরূপে অপরাধে নিমজ্জিত হয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টির করেছে। মানবিকতা দেখাতে গিয়ে রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশে অবহন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান হওয়া উভয় দেশের জন্যই মঙ্গল।