বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশড হওয়ায় ফুঁসছেন পাকিস্তানের গ্রেটরা

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪, ১২:১১ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের হোয়াইটওয়াশড হওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। এমন হারের জন্য ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি পিসিবির কড়া সমালোচনা করেছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইনজামাম-উল-হাকরা।

এই সফরের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্টে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের। এবার নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল দুই ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে।

রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করা পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৪৬ রানে। ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতে যায় ১০ উইকেটে। দেশের মাটিতে টেস্টে ১০ উইকেটে হার পাকিস্তানের সেটিই প্রথম।

একই মাঠে বৃষ্টির কারণে চার দিনে পরিণত হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান করা পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে করে ১৭২। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারালেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটি মঙ্গলবার ৬ উইকেটে জেতে বাংলাদেশ।

ঘরের মাঠে এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার তেতো স্বাদ পেল পাকিস্তান।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সাবেক ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক মিয়াঁদাদ বললেন, উত্তরসূরিদের বর্তমান অবস্থা দেখে ব্যথিত তিনি।

“এটা কষ্টের যে, আমাদের ক্রিকেট এই পর্যায়ে এসেছে। বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতেই হবে তাদের গোছানো পারফরম্যান্সের জন্য। কিন্তু এই সিরিজে যেভাবে আমাদের ব্যাটিং ভেঙে পড়েছে, তা খুব বাজে লক্ষ্মণ।”

এই হারের দায় শুধু ক্রিকেটারদের ওপর চাপাচ্ছেন না মিঁয়াদাদ। তার মতে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি) সমানভাবে দায়ী।
“আমি শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দেব না, কারণ গত দেড় বছরে বোর্ডে (পিসিবি) যা কিছু হয়েছে এবং অধিনায়কত্ব ও ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তন দলকে প্রভাবিত করেছে।”

ভারতে অনুষ্ঠিত গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর সব সংস্করণের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বাবর আজম। পরে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় শান মাসুদকে, টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব পান শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে এক সিরিজ পরই আফ্রিদিকে সরিয়ে সাদা বলের দুই সংস্করণের নেতৃত্বে ফেরানো হয় বাবরকে।

এছাড়া গত এপ্রিলে টেস্টের জন্য জেসন গিলেস্পি ও সাদা বলের দুই সংস্করণের জন্য গ্যারি কার্স্টেনকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় পিসিবি।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার গিলেস্পির কোচিংয়ে প্রথম সিরিজ ছিল এটিই। আর মাসুদের নেতৃত্বে প্রথম পাঁচ টেস্টেই হারল পাকিস্তান। ঘরের মাঠে সবশেষ ১০ টেস্টে জয়ের দেখা পায়নি তারা (৬ হার ও ৪ ড্র)।

সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বাবর সাদা পোশাকে ব্যাট হাতে ছন্দে নেই অনেক দিন ধরে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে করাচিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর সবশেষ ১৬ ইনিংসে একবারও পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তিনি। এই সময়ে ত্রিশের ঘরে যেতে পারেন স্রেফ তিনবার।

আরেক সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম সিরিজ হারের জন্য কাঠগড়ায় তুললেন ব্যাটসম্যানদেরই।
“অতীতে সেরা দলগুলোকে হারানোর জন্য হোম সিরিজকে সবসময় আমাদের সেরা সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এর জন্য তো ব্যাটসম্যানদের রান পেতে হবে।”

টেস্টে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরি করা ইউনিস খান সমস্যা দেখছেন ব্যাটসম্যানদের মানসিকতায়।
“আমাদের ব্যাটাররা অতীতে রান পেয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি মনে করি, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তাদের মানসিক দৃঢ়তা দরকার।”
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ