বাংলাদেশে মায়ানমার প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা প্রত্যাবসন উদ্যোগ এগোলে কি?

আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৩, ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ

আশা জেগেছিল কিন্তু তা অনেকটাই ক্ষীণ উপলব্ধি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রত্যাবসিত রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বিষয়টি অনিশ্চিতই থেকে যাচ্ছে। মায়ানমারের সামরিক জান্তা মোটেও আন্তরিক বলে মনে হচ্ছে না। তারা সময়ক্ষেপণকেই কৌশল হিসেবে নিয়েছে বলে উপলুব্ধ হচ্ছে।
১৫ মার্চ মিয়ানমারের ১৭ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসেন। দলটি আশ্রিত শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় থাকা প্রায় ৫শো রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই শেষে বুধবার (২২ মার্চ) দেশে ফিরে গেছেন। প্রতিনিধি দলটি তাদের কর্তৃপক্ষকে তাদের যাচাই অভিজ্ঞতা জানাবেন।
প্রতিনিধিদল কর্তৃক সাত দিনে তথ্য যাচাই হয়েছে ১৪৭টি পরিবারের প্রায় ৫শো রোহিঙ্গার। সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে প্রায় একই রকমের বিষয় জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- প্রার্থীর বাড়ি রাখাইনের কোন গ্রামে ছিল, সেখানকার মেম্বার-চেয়ারম্যান কে ছিলেন, সমাজের সরদার কে ছিলেন, সেখানে থাকতে কতজন সন্তান ছিল, বাংলাদেশে আসার পর কতজন ছেলেমেয়ে জন্ম নিয়েছে- ইত্যাদি।
কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে সত্যিকার অর্থেই যদি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসন শুরু হয়- তা দেশের ১০ লাখের অধিক শরণার্থীকে কতদিনে মায়ানমারে প্রত্যাবসন সম্ভব হবে? রোহিঙ্গাদেন মধ্যে প্রজনন হার এতোই ব্যাপক যে, যাচাই-বাছাই সংখ্যা হারে প্রত্যাবসন হলে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। প্রতিমাসেও যদি ৫শো করে প্রত্যাবাসিত হয় প্রতিমাসে রোহিঙ্গাদের জন্মহার তার চেয়ে বেশি হবে। অর্থাৎ যাচাই-বাছাইয়ের নামে সমস্যাকেই উপেক্ষা করা হচ্ছে না কী? মায়ানমারের সামরিক জান্তা যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে আন্তরিক নয় সেটা বেশ স্পষ্ট। তারা কৌশল হিসেবে নানা ফন্দি ফিকির কনে সময় কাটিয়ে যাচ্ছে। মূলত রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনের ব্যাপারে কার্যকর যে উদ্যোগÑ সেটা হচ্ছে না। প্রারম্ভে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সমস্যাকে যে ভাবে দেখেছে বর্তমান বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তেমন করে দেখছে না। বরং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চর্চাই বেশি হচ্ছে। জাতিসংঘ কার্যকর উদ্যোগ নিবে এ ব্যাপানে বাংলাদেশ বেশ আশান্বিত ছিল। কিন্তু জাতিসংঘ সেটা করছে না। ফলে মায়ানমার তেমন একটা চাপও অনুভব করছে না। তাহলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কী? সমাধান ওই একটাই জাতিসংঘকেই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগি ভূমিকা নিতে হবে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া জাতিসংঘের মৌল নীতির সাথেই সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া উন্নত দেশসমূহের চাপ বাড়াতে হবে যাতে করে জাতিসংঘ তাদের উদ্যোগ এগিয়ে নিতে পারে। নতুবা বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট ভয়ঙ্কররূপে বাড়াতেই থাকবে। যা বাংলাদেশের জন্য মোটেও সহায়ক হবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ