রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। খড়ের দামও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কচুরীপানাসহ বিনামূল্যের গো-খাদ্যের প্রতি ঝুঁকছে কৃষক। গো-খাদ্যের এই সংকটের কারণে গাই গরুর দুধের পরিমান কমে গেছে। পাশাপাশি মোটাতাজাকরণ খামার মালিকরাও গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামার পরিচালনা করতে হিমসিম খাচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার গরু ও ২৭২ টি মহিষ রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার সর্বত্রই গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলাব্যাপি গো-খাদ্যের সংকটকে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পাশ্ববর্তী নাটোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কম দামে খড় এনে বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে কৃষকরা গবাদি পশু পালন করতে হিমসিম খাচ্ছে।
উপজেলার মাড়িয়া এলাকার কৃষক লুৎফর রহমান জানান, গত বছর আমনের ফলন কম হওয়ায় খড়ের ঘাড়তি দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন তার আটটি গরুর জন্য দুই বোঝা (আটি) খড় লাগে। বর্তমানে যেসব কৃষকের ঘরে বেশি খড় আছে তাদের কাছে থেকে এক বোঝা খড় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় কিনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। তাও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে অনেকে কচুরীপানা ও কলা গাছ কেটে খাওয়ানো হচ্ছে। উপজেলার মাঠে মাঠেও এখন ঘাস মিলছে না।
হামিরকুৎসার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তার সাতটি গরু রয়েছে। বেশি দামে খড় কিনে খাওয়াতে না পারায় তিনি গত সপ্তাহে দুটি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। তারপরও বাকি গরু গুলোকে বেশি দামে খড় কিনে খাওয়াতে আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
খড় বিক্রেতা আনোয়ার জানান, তিনি পাশবর্তী নাটোরের সিংড়া থেকে খড় এনে ছোট বোঝা ৪০০ এবং বড় বোঝা ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ভাল লাভ হওয়ায় তিনি খড়ের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবিব জানান, উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একাধিক গরু ছাগল রয়েছে। বর্তমানে গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বিকল্প খাদ্য হিসাবে কচুরীপানা ও কলা গাছ খাওয়ানো হচ্ছে। এতে তেমন শক্তি না থাকায় গবাদি পশুগুলো দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। তার মতে স্থানীয় পর্যায়ে গো-খাদ্য সংকটের বিষয়টি মন্ত্রনালয়ে জানানো হয়েছে।